জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন ইস্যুতে এক সঙ্গে কাজ করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতকে নিয়ে বিব্রত বাংলাদেশ
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনসহ নিরাপত্তা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে কাজ করতে চায়। ভারত তাদের এই সহযোগিতার কথা অনেক আগে জানালেও যুক্তরাষ্ট্রও গতমাসে বাংলাদেশকে বিষয়টি জানিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই ইস্যুতে জোট বাঁধার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবেই নাকচ করে দিয়েছে ভারত। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ভারতের ‘না’কে ‘হ্যাঁ’ করানোর দায়িত্ব দিয়েছে বাংলাদেশকে।
এ নিয়ে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরসহ মার্কিন কূটনৈতিক মহল বাংলাদেশকে চাপ দিচ্ছে এবং এ নিয়ে বাংলাদেশ বিব্রত অবস্থায় পড়েছে বলে কূটনৈতিক একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এই কথার সত্যতা স্বীকার করে এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন ব্লুম বার্নিকাট বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এবং দেশের কূটনীতিকদের বলছেন, তারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন ইস্যুতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায় এবং সেখানে ভারতের সঙ্গে তারা জোট বদ্ধ হতে চায়। এই তিন দেশের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে সমঝোতা বৈঠক চায় যুক্তরাষ্ট্র। ভারতকে এ বিষয়ে রাজি করাতে বাংলাদেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে বার্নিকাট লবিং শুরু করেছেন বলেও ওই কর্মকর্তা জানান।
এছাড়া বার্নিকাট স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠকেও তাদের আগ্রহের কথা বলেছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতার কথা বলেছেন বার্নিকাট। কিন্তু জোটবদ্ধভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হলে অবশ্যই তিন দেশের সম্মতি দরকার। এখনও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়নি। আমরা জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে বদ্ধ পরিকর। তা কেউ আসুক বা না আসুক।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই ইস্যুতে জোট বাঁধতে নারাজ ভারত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে রয়েছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ভারতের সঙ্গে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। আর ভারত না করেছে। মাঝখানে বাংলাদেশ পড়েছে বিব্রতকর অবস্থায়।
তিনি জানান, এর আগেরবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ শুরুর পর থেকেই দেশে সৃষ্ট জঙ্গি হামলাসহ সব নাজুক পরিস্থিতিতে ভারত বাংলাদেশের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছিল। আর তখন যুক্তরাষ্ট্র বিরোধিতা করেছে। এখন তারা আসতে চায়, ফলে ভারত বিষয়টি চিন্তা-ভাবনা করছে। আর কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো রাষ্ট্রকেই এই ইস্যুতে মানা করতে পারছে না বা পারবে না।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। বিশ্বব্যাপী আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ প্রশংসিত। আমরা এই ইস্যুতে সব রাষ্ট্রকেই সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানাই। তবে জোটবদ্ধ হতে হলে আলাপ-আলোচনার বিষয় থাকে।