মীর কাসেমের রিভিউ আবেদন, খালাসের আশা আইনজীবীর
এস এম নূর মোহাম্মদ : মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আপিল বিভাগের ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে আবেদন করেছেন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। গতকাল রোববার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়। মীর কাসেম আলীর পক্ষে ১৪টি যুক্তিতে ৮৬ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে খালাসের আর্জি জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।
এদিকে মীর কাসেম আলী রিভিউতে খালাস পাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। রিভিউ দায়েরের পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমরা মনে করি জসিমের ব্যাপারে (১১ নম্বর অভিযোগ) মীর কাসেম আলীকে অবশ্যই আপিল বিভাগ রিভিউতে খালাস দেবেন। দুটি ব্যাপার আছে, একটি হলো আপিল বিভাগ নিজেই স্বীকার করেছেন ট্রাইব্যুনালে যে বিচার হয়েছে সেখানে তাকে অ্যাবেটর (সহযোগী) হিসেবে দেখানো হয়েছে। কিন্তু আপিল বিভাগ তাকে সরাসরি প্রধান আসামি হিসেবে সাজা দিয়েছেন। এটা আইনসম্মত হয়নি। আমরা বিশ্বাস করি, ১১ নম্বর অভিযোগে যেখানে জসিম হত্যাকা-ের ব্যাপারে তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে সেটা কোনো অবস্থায়ই বহাল থাকবে না।
জসিম হত্যার ব্যাপারে তিনি বলেন, এ ঘটনায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সবই বানানো এবং শোনা কথা। তবে এখানে জসিমের এক বড় ভাই রাজিব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। তাকে তদন্তকারী অফিসার পরীক্ষা করলেও সাক্ষী হিসেবে উপস্থাপন করা হয়নি। আমরা মনে করি জসিমের ভাই জীবিত থাকা অবস্থায় প্রসিকিউশনের তরফ থেকে তাকে সাক্ষ্য না দিয়ে কতগুলো বানানো সাক্ষী দিয়ে তার বিচারের চেষ্টা করা হয়েছে। সেখানে অবশ্যই আইনের ব্যত্যয় ঘটেছে।
খন্দকার মাহবুব বলেন, আপিল বিভাগ যখন মামলা পর্যালোচনা করেন তখন স্বীকার করলেন এবং জাজমেন্টেও উল্লেখ রয়েছে, যে অভিযোগে তাকে মৃত্যুদ- দেওয়া হয়েছে সেটা সঠিক নয়, ডিফেকটিভ চার্জ (ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগ)। আইনের বিধান মতে যদি ডিফেকটিভ চার্জ হয়, তাহলে আপিল বিভাগ সেটা রিমান্ডে পাঠায়। সেক্ষেত্রে আসামি পুনর্বিচারের সুযোগ পায়।
মীর কাসেম আলীকে একজন সমাজসেবক দাবি করে খন্দকার মাহবুব বলেন, তিনি কিন্তু রাজনীতিবিদ ছিলেন না। তিনি একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক। তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশের মাটিতে মানুষের শিক্ষার জন্য কল্যাণ ও সুচিকিৎসার জন্য কাজ করেছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশের বেকার যারা আছেন তাদের কর্মসংস্থানে তিনি সমাজসেবক হিসেবে কাজ করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদ- বহাল রাখেন। ৬ জুন আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম