ধর্মের কারণে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হচ্ছে না : অভিজিৎ মুখার্জি
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : ঢাকায় সফররত ভারতের লোকসভার সদস্য ও দেশটির বর্তমান রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির ছেলে অভিজিৎ মুখার্জি বলেছেন, বাংলাদেশে ধর্মীয় কারণে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা বলে মনে হচ্ছে না। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম সম্প্রদায়ের উপরও হচ্ছে। তিনি বলেন, একটি গোষ্ঠী তাদের উদ্দেশ্য বা মতের জন্য এই হামলা করছে। ধর্মের ভিত্তিতে সম্পর্ক নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে। এটি উপেক্ষা করা উচিত।
গতকাল রোববার নিউ ইস্কাটনে সংগঠনের কার্যালয়ে বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে অভিজিৎ মুখার্জি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশে আইএস সম্পর্কে পশ্চিমাদের ধারণা সম্পর্কে লোকসভার এই সদস্য বলেন, যে হত্যাগুলো হচ্ছে তা খুবই খারাপ। কিন্তু কিছু না জেনে কারও ওপর দোষ চাপানো উচিত নয়। সঠিক ঘটনা খুঁজতে হবে। ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হবে। আগে নিতে পারলে আরও ভালো।
অভিজিৎ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রেও অনেক ঘটনা ঘটছে। তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা, অর্থ বাংলাদেশ বা ভারতের চেয়ে বেশি। সেখানেও হামলা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতে মানুষের স্বাধীন মতপ্রকাশের সুযোগ আছে। গোপনীয়তা বজায় রাখার অধিকার আছে। তাছাড়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীও সাম্প্রতিক হত্যা নিয়ে খুবই চিন্তিত এবং তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
এর আগে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভারতের লোকসভার এই সদস্য বলেন, বাংলাদেশে এটি তার ব্যক্তিগত সফর। এখানে আসার আগে তিনি নিজ দেশের রাষ্ট্রপতি, লোকসভার স্পিকার ও কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা সরকার ও এ দেশের মানুষকে এটি জানাতে বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের পাশে আছে। বাংলাদেশের যেকোনো সমস্যা যেন সঙ্গে সঙ্গে ভারতকে জানানো হয়। তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের পাশে বন্ধুর মতো থাকতে চায়, বড় ভাইয়ের মতো নয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি একে আজাদ চৌধুরী। বক্তব্য দেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান, মৈত্রী সমিতির উপদেষ্টা আইনজীবী আমীর-উল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সুবীর কুশারী, রাজনীতিবিদ মোজাফফর হোসেন পল্টু প্রমুখ।
এর আগে গতকাল অভিজিৎ রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সেখানে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে ঐতিহাসিক হিসেবে অভিহিত করে রাষ্ট্রপতি বলেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের কারণে বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও ভারত (বিবিআইএন) উদ্যোগসহ দুটি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পর্ক বহুমাত্রিক হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদিন জানান, অভিজিৎ মুখার্জীকে বঙ্গভবনে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের সাহায্য ও সহযোগিতার কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
বৈঠককালে অভিজিৎ ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর শুভেচ্ছা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে পৌঁছে দেন।