ক্রসফায়ার দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে : শাহদীন মালিক
আরিফুর রহমান : বিশিষ্ট আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেছেন, কথিত বন্ধুকযুদ্ধে লোকজনকে মেরে ফেলা হচ্ছে যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক কাজ। সংবিধানে আছে কোনো ব্যক্তিকে তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে বাধ্য করা যাবে না। সংবিধানে আরেক বিষয় বলা আছে তাকে নির্যাতন করা যাবে না, সেই সাথে এটাও বলা আছে অমানবিক, মর্যাদাহীন আচরণ বা ব্যবহারও করা যাবে না। এগুলোর কিছুই এখন মানা হচ্ছে না। যেসব দেশে পুলিশ এসব কাজ করে, সেসব দেশে অপরাধের সমস্যা সমাধান হয় না বরং প্রত্যেকটা দেশে আস্তে আস্তে বর্বর ও সহিংস সমাজে পরিণত হয়। বিবিসি বাংলা
তিনি বলেন, তদন্তের খাতিরে যদি পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করে তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট সর্বোচ্চ ১৫ দিন পর্যন্ত রিমা- অর্থাৎ পুলিশ হেফাজতে একজন অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠাতে পারে। এই আইনটা করা হয়েছিল ১৮৯৮ সালে। বর্তমানে আমাদের সুপ্রিম কোর্টে রায় হয়েছে সংবিধানের আলোকে পুলিশ কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিতে পারবে। কিন্তু হাইকোর্ট যেটা বলেছে সেই জিজ্ঞাসাবাদটা মোটামুটি খোলাখুলিভাবে হতে হবে। অর্থাৎ অভিযুক্ত কারও উপস্থিতিতে বা আইনজীবীর উপস্থিতিতে অথবা এমন জায়গায় যেখানে তার পরিচিত লোকজনরা দেখতে পায় তাকে কিভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই বিষয়টা মোটেও করা হচ্ছে না।
শাহদীন মালিক বলেন, পুলিশ যদি কাউকে হেফাজতে নিয়ে নির্যাতন করে, তারপর তাকে যেদিন আদালতে তুলবে সেদিন সে যদি অভিযোগ করে তাহলে সাথে সাথে জেলা জজকে অভিযোগের জন্য তদন্তের নির্দেশ দিতে হবে। এই আইনটা বেশিরভাগ লোক জানে না বলে প্রয়োগ হচ্ছে না।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হল সে ব্যাপারে আইনে কি বলা আছে এ প্রশ্নের উত্তরে শাহদীন মালিক বলেন, এটা শুধু আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা না, এটা আমি বলব দেশে কারও মনে সন্দেহ নাই যে, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের মেরে ফেলছে। প্রথম প্রথম ২০০৪-০৫ সালের দিকে এটা হয়তো মানুষ বিশ্বাস করত। কিন্তু এখন এটা আর কেউ বিশ্বাস করে না। এগুলো বিচারবর্হিভূত হত্যাকা- হচ্ছে। আমি বলব মাদারীপুরে যে ঘটনা হলো এখন আইন অনুযায়ী তাকে যারা নিয়ে গিয়েছিল তাদের তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করতে হবে। সঠিক তদন্ত করতে হবে। এরকম দোষী দুই-চারজন পুলিশকে শাস্তি না দিলে এই ধরনের ঘটনা চলতেই থাকবে। সেক্ষেত্রে পুলিশের আসল অপরাধী ধরার যোগ্যতা কমে যাবে।
পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে বিচার চাইতে হলে তাদের কি করতে হবে এ প্রসঙ্গে শাহদীন মালিক বলেন, তারা আদালতে গিয়ে দরখাস্ত দিয়ে বলতে পারে আমার ছেলেকে বা ভাইকে হত্যা করা হয়েছে এবং অমুক থানার লোকজন এ হত্যাকা-ের সাথে জড়িত। আমাদেরতো পুলিশের বিরুদ্ধে এই সাহস করার লোক নাই। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ