বর্তমান আওয়ামী জোট সরকার বরাবরই বলে আসছে ধর্মীয় উগ্রবাদ তথা জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। এটা শুধু বর্তমান আওয়ামী জোট সরকারই নয় বরং বিএনপি-জামায়াত জোট যখন রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তাদের মুখেও এমন কথাই শোনা গেছে। তারপরও বাংলাদেশে কোনো এক অজানা কারণে ধর্মীয় উগ্রবাদ তথা জঙ্গিবাদ শক্ত অবস্থানে চলে আসছে। কোনো একসময় আমরা সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মুখে শুনেছি, বাংলাভাই ইংলিশ ভাই সবই মিডিয়ার সৃষ্টি। গত দুই সপ্তাহে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে ১৮ ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৮ জনকে জঙ্গি বলে দাবি করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
স্বাভাবিকভাবেই ধারণা ছিল, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী দীর্ঘদিন যাবৎ এসব গুপ্তহত্যা নিয়ে ঘোলাজলের মধ্যেই হাবুডুবু খাচ্ছে। দুয়েকজন জঙ্গি গ্রেফতারের পর হয়তো পূর্বের হত্যাকা-গুলোর ক্লু খুজে পাবে এবং মূল অপরাধীরা গ্রেফতারের মাধ্যমে বিচারের মুখোমুখি হয়ে দেশে একটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি ফিরে আসবে।
রিমান্ডে থাকা অবস্থায় ফাহিমের কাছ থেকে প্রকৃত তথ্য উদ্ধার না করে কোন বা কি তথ্যের ভিত্তিতে বা কি উদ্ধারের অভিযানের নামে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হলো ফাহিমকে? স্বাভাবিকভাবেই এধরনের ক্রসফায়ার মানুষের মনে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। কেন ধর্মীয় উগ্র জঙ্গিদের মূল হোতাদের গ্রেফতারের আগেই ক্রসফায়ারের নাম করে মাঠ পর্যায়ের অপরাধীদের হত্যা করে মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে? তাহলে কি দেশে ধর্মীয় জঙ্গিবাদের উত্থানের পেছনে এমন কোনো গোষ্ঠী বা ব্যক্তির হাত রয়েছে যাদের গ্রেফতার করলে সরকারের মানসম্মান নিয়ে জাতির কাছে প্রশ্ন উঠবে? ধর্মীয় উগ্র জঙ্গিদের দমনে কি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী আগের একই পন্থা অবলম্বন করছেন? যদি ওই পন্থাই অবলম্বন করে থাকেন, তাহলে কি এই ক্রসফায়ার পারবে জঙ্গিবাদের উত্থান ঠেকাতে?
লেখক : কলামিস্ট
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন