ডেস্ক রিপোর্ট : মিয়ানমার থেকে সীমান্ত পার হয়ে যারা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে বসবাস করছে তাদের চিহ্নিত করতে আর ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটিকে ব্যবহার করতে চাইছে না বাংলাদেশ বরং এক্ষেত্রে মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবেই তাদের নির্দেশ করা হচ্ছে।
সম্প্রতি এই জনগোষ্ঠীর সঠিক সংখ্যা নিরূপণের জন্য বাংলাদেশ যে শুমারি পরিচালনা করছে তাতে পরিসংখ্যান ব্যুরোর কর্মকর্তারা ‘মিয়ানমারের নাগরিক’ কথাটি ব্যবহার করেছেন। এছাড়াও গতকাল সোমবার ঢাকায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ওই শুমারি সম্পর্কে অবহিত করতে গিয়ে পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হক রোহিঙ্গা শব্দটিকে কখনোই উচ্চারণ না করে ‘অনিবন্ধিত মিয়ানমারের নাগরিক শুমারি’ শব্দটিকে ব্যবহার করেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, মিয়ানমার যেহেতু রোহিঙ্গাদের স্বীকার করতে চায় না, সেজন্য এ শব্দটি বাদ দিয়ে বাংলাদেশ ভিন্নভাবে আলোচনা শুরু করতে চায়।
মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত অনুপ কুমার চাকমা এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মিয়ানমার নিজেও রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করতে চায় না। সেদেশের ১৩৫টি আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে তারা রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্ত করেনি। মিয়ানমার বরং এই সম্প্রদায়কে ‘বাঙালি’ হিসেবে বর্ণনা করছে। তারা মনে করে, বাংলাদেশ থেকে সম্প্রদায়টি একসময় মিয়ানমারে আস্তানা গাড়ে।
মিয়ানমারের নাগরিক শুমারির মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার কী করবে- তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট করা না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, এই শুমারির প্রতিবেদন সরকার মিয়ানমারের কাছে তুলে ধরবে। কারণ, পররাষ্ট্র সচিব এমন এক সময়ে কূটনীতিকদের বিষয়টি নিয়ে অবহিত করলেন, যার কিছুদিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হয়ে তার মিয়ানমার যাওয়ার কথা রয়েছে।
সরকার বলছে, আসছে ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমারের নাগরিকদের (যারা রোহিঙ্গা হিসেবে পরিচিত) প্রকৃত সংখ্যা কত তা নিরূপণ করা সম্ভব হবে।
কূটনীতিকদের তরফ থেকে এ জরিপের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। পররাষ্ট্র সচিব ছাড়াও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান ব্যুরোর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। তারা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই শুমারির ফলাফল প্রকাশ করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি