ক্রসফায়ারের গল্প
আনু মুহাম্মদ
‘ক্রসফায়ার’ মানে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হেফাজতে থাকা নিরস্ত্র, কখনও হাতকড়া পরানো মানুষকে গুলি করে হত্যা করা এবং তারপর একটি মুখস্ত গল্প বলা। ধরে নেওয়া হয়, যে গল্পই বলা হোক না কেন, নাগরিকদের দায়িত্ব হলো তা বিশ্বাস করা। এটা খুবই অদ্ভূত, আপাতদৃষ্টিতে মানসিকভাবে সুস্থ, শিক্ষিত লোকজনও পাওয়া যায়, যারা এই ঠা-া মাথার খুনের পক্ষে যুক্তিতর্ক সাজান। কাউকে কাউকে ঠোঁট উল্টিয়ে বলতে শুনি, ‘এসব সন্ত্রাসী ছেলেদের জন্য আমার কোনো মায়া হয় না।’ আমি বলি, খুন হয়ে যাওয়া অজানা অচেনা ‘সন্ত্রাসী’ নামে অভিহিত কারও জন্য মায়া হবার দরকার নেই, তাদের মানবাধিকার নিয়েও আপনার চিন্তার দরকার নেই। নিজের জন্য, নিজের সন্তান আর স্বজনদের জন্য একটু মায়া খুঁজে বের করেন। নিজের আর স্বজনদের জন্য কি এরকম একটি রাষ্ট্র আর সমাজই আপনার পছন্দ, যেখানে যাদের হাতে ক্ষমতা আর অস্ত্র থাকবে, তারা যাকে খুশি হয়রানি করতে পারবে, যাকে খুশি তাকে গুম, খুন করতে পারবে? গুপ্তহত্যা, টার্গেট কিলিং চলবে অবাধে? কোনো বিচার হবে না তার? ত্বকী, তনু, সাগর-রুনির মতো অনেক খুনের বিচার হবে না?
লেখক : অর্থনীতিবিদ / সম্পাদনা : জব্বার হোসেন