‘ট্রাম্পের উস্কানিতে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা বাড়ছে’
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : প্রায় তিন মাস আগে সারাহ ইব্রাহিমের ফোর্থ গ্রেডে পড়া ছেলে স্কুল থেকে ফিরে এসে মাকে হতভম্ব করা একটি প্রশ্ন করে। মাকে সে জিজ্ঞেস করে, ‘তোমাকে ফেরত পাঠানোর আগে আমি কি তোমাকে গুডবাই বলার সময় পাবো?’
যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সংস্থায় কাজ করা সারাহ একজন আরব আমেরিকান মুসলিম। ৩৫ বছর বয়সি এই মা জানান, তার সন্তানের ক্লাসের বাচ্চারা আলোচনা করছিল ‘ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে কাকে কাকে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে হবে?’
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান বের্নারডিনোতে এক মুসলিম দম্পতির গুলিতে ১৪ জন নিহত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মুসলিম অভিবাসীদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার এবং মসজিদগুলোতে আরও নজরদারি বাড়ানোর প্রস্তাব দেন। এর কয়েক মাস পরই উপরে বর্ণিত ঘটনাটি ঘটে। বিডিনিউজ
এরপর গেল সপ্তায় ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর সমকামী নৈশক্লাবে যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া এক মুসলিম ব্যক্তির গুলিতে ৪৯ জন নিহত হলে ট্রাম্প তার মুসলিম-বিরোধী কথাবার্তা আরও তীব্র করেন। এবার তিনি ‘সন্ত্রাসের প্রমাণিত ইতিহাস আছে’ এমন দেশগুলো থেকে অভিবাসী নেওয়া স্থগিত করার প্রস্তাব দেন।
মসজিদগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানোর কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘উগ্রপন্থি মুসলিমরা আমাদের শিশুদের অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে।’
পুরো ডেমক্রেটিক পার্টি ও কিছু রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের এসব মন্তব্য থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখলেও অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আমেরিকান মুসলিমরা।
ট্রাম্পের প্রচারণার কারণে এমন একটি পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে যেখানে কিছু মানুষ কোনো শাস্তির ভয় না করেই মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা উগরে দিতে বা আক্রমণ করতেও দ্বিধা করছে না।
এক ইফতার পার্টিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে সারাহ বলেছেন, ‘ট্রাম্পের প্রচারণা মানুষের মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা ভাবনাকে প্রকাশ্যে এনেছে। কোনো লজ্জা ছাড়াই জোরেশোরে নিজেদের ঘৃণা প্রকাশ করার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। তারা জানে এতে তাদের কোনো শাস্তি হবে না।’
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলেও সাড়া দেয়নি ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির। তার উক্তিগুলো বর্ণবাদী, এই সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প; গণমাধ্যম ও বিরোধীরা প্রায়ই তাকে ভুল বুঝে বলে দাবি করেছেন তিনি। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ