অর্থনৈতিক সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের কি টলারেন্স দেখানো হচ্ছে : মঈন উদ্দীন খান বাদল
মাহমুদুল আলম : ব্যাংকিং খাতের লুটপাটকারীদের ‘অর্থনৈতিক সন্ত্রাসী ও অর্থনৈতিক জঙ্গি’ বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি মঈন উদ্দীন খান বাদল। এই লুটপাটকারীদের প্রতি সরকার টলারেন্স দেখাচ্ছে কি না, তা জানতে চেয়েছেন তিনি। গতকাল তিনি জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এ প্রশ্ন রাখেন।
সংসদ সদস্য বলেন, যারা সন্ত্রাস করে, তাদের প্রতি জিরো টলারেন্স দেখানো হচ্ছে এবং হরহামেশাই ক্রসফায়ার দেখা যাচ্ছে। কিন্তু যেসব অর্থনৈতিক সন্ত্রাসী ও অর্থনৈতিক জঙ্গি, যারা বাংলাদেশের হৃৎপি- খুবলে খায়; তাদের প্রতি কি কোনো টলারেন্স দেখানো হচ্ছে? তিনি বলেন, একের পর এক ব্যাংক কেলেঙ্কারি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়েছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারিতে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি দায়ী হলেও তাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই। হলমার্কের ঘটনায় সাজা হয়নি। বেসিক ব্যাংকের ঘটনায় মামলা নেই। আবদুল হাই বাচ্চু কিংবা ডেসটিনির ঘটনায় সাজা হয়নি। এ অর্থের কুমিররা আইনকে গ্রাস করতে পারে।
বাদল আরও বলেন, ‘আর্থিক সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের ব্যাপারে সরকার নির্মোহ হয়ে দৃঢ় আচরণ করতে না পারলে, আইনানুগ ব্যবস্থা না নিলে, বিত্তের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করলে, ইতিহাস আমাদের একদিন সংবিধান লঙ্ঘনকারী হিসেবে চিহ্নিত করবে।’ সরকারের অর্থনৈতিক নীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে অর্থনৈতিক নীতি নেওয়া হয়েছে, তাতে বাংলাদেশের ১০ শতাংশ মানুষের কাছে মোট সম্পদের ৪৬ দশমিক ২ শতাংশ চলে গেছে। আর নিম্নের দিকে ৪০ ভাগ মানুষের কাছে ১৩ ভাগ সম্পদ। তিনি বলেন, দুই কারণে আয় বৈষম্য বাড়ছে। বর্তমানে যে ধরনের উন্নয়ন মডেল নেওয়া হয়েছে, তাতে অর্থবহ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা যাচ্ছে না। মানসম্পন্ন শিক্ষার বৈষম্য থাকায় ভালো কাজের সুযোগও কম। দ্বিতীয়ত, নিচের দিকে ৪০ শতাংশ মানুষকে সামাজিক সুরক্ষার সুবিধা নিয়ে চরম দারিদ্র্য থেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের জন্য অর্থবহ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাচ্ছে না।
এই সংসদ সদস্য দাবি করেন, প্রতিবছর গড়ে বাংলাদেশ থেকে ৮০ কোটি ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে। একটি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বানানো হয়েছিল এগুলো বের করার জন্য। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, দুদকের কাজ হয়ে গেছে দায়মুক্তি দেওয়া। ২০১৫ সালেও ৪২১ জনকে দায়মুক্তি দিয়েছে। সাম্প্রতিক গুপ্তহত্যার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এই যে চাপাতির সন্ত্রাস শুরু হয়েছে, এরা কারা? গুপ্তহত্যাকারীরা কারা? শিক্ষায় আমরা অনেক ভালো করেছি। কিছু চাকরিজীবী তৈরি হয়েছে। সংস্কৃতিকর্মী তৈরি হয়নি।’ তিনি বলেন, প্রতি তিনজনে একজন মাদ্রাসার ছাত্র। কওমি মাদ্রাসার সংখ্যা বিশাল। কওমি মাদ্রাসার সংস্কৃতি কী? তারা কি মুক্তিযুদ্ধের শিক্ষা গ্রহণ করে? মুক্তিযুদ্ধকে অগ্রাহ্য করে বাংলাদেশে মানুষ হওয়া যাবে না। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি