মেডিক্যাল ভর্তিপরীক্ষায় বিতর্ক এড়াতে জোর প্রস্তুতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের
জাফর আহমদ : বিগত বছরগুলোয় এমবিবিএস ভর্তিপরীক্ষা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এমন বিতর্ক এড়াতে এবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে পরামর্শসভার আয়োজন করে মন্ত্রণালয়। সভায় মন্ত্রী, সম্পাদক, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের পরিচালক ও বিএমডিসির পরিচালক উপস্থিত ছিলেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে সভায় স্বচ্ছ ভর্তিপরীক্ষা অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্টদের মতামত লিপিবদ্ধ করা হয়। এসব পরামর্শ পর্যালোচনা করে পরীক্ষার বিষয়ে চূড়ান্ত কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে কর্তৃপক্ষ।
নাসিম বলেন, স্বাস্থ্য খাতে আমাদের ভালো অর্জন আছে। এ অর্জন ধরে রাখতে হলে মেডিক্যাল ভর্তিব্যবস্থার প্রতি নজর দিতে হবে। সাম্প্রতিক অপারেশনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া না পারলেও আমাদের চিকিৎসকরা বৃক্ষ মানব ও জোড়া শিশুর সফল অপারেশন করেছে। এ অর্জনকে আমরা আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই।
স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, পরিবর্তিত প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাইয়ে প্রযুক্তি সজ্জিত হতে যতœশীল হতে হবে।
সমকাল সম্পাদক গোলাম সরওয়ার বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ গড়ে উঠছে। কিন্তু মান নিয়ে প্রশ্ন আছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের ব্যাপারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক সরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসে ফেসবুক, টুইটার ব্যবহার করা হয়। পরীক্ষার আগের দিন থেকে এসব সামাজিক মাধ্যম বন্ধ রাখা এবং ভর্তিপরীক্ষা স্বচ্ছ করতে পরীক্ষা কেন্দ্র ও পরীক্ষার্থী কমিয়ে আনার প্রস্তাব করেন তিনি।
আমাদের অর্থনীতি সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান বলেন, পরীক্ষার্থী কমিয়ে আনা একটি আত্মঘাতী কাজ হবে। এর মাধ্যমে গ্রাম থেকে আসা শিক্ষার্থীরা বেশি বঞ্চিত হবে। পরীক্ষার স্বচ্ছতার নামে পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার সুযোগ থেকেই বঞ্চিত করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। প্রয়োজনে ভর্তিপরীক্ষার কেন্দ্রগুলোর ব্যবস্থাপনা জোরদার করতে হবে।
স্বাচিবের সভাপতি মাহামুদ হাসান বলেন, ভর্তি প্রক্রিয়া জটিল, এজন্য সতর্কও থাকতে হবে। ভর্তি কার্যক্রমে পরিবীক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।
ইকবাল আর্সালান বলেন, কোন কোন মেডিক্যাল কলেজে অব্যবস্থা চলছে। সে কারণেই প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কথা উঠলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। এতে সমস্যা আরও বাড়ছে। বাস্তবতা মেনে নিয়ে সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হতে হবে। চিকিৎসা ব্যবস্থার মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না।
কোচিং সেন্টারের উপর নজরদারি করার প্রস্তাব করেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাইউম। ভর্তির প্রলোভন দেখিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং সেন্টারে ভর্তি করে সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে। মেডিকেলে ভর্তি করিয়ে দিতে প্রশ্ন ফাঁসের মতো ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ভর্তিতে প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধ করতে হলে কোচিং সেন্টারগুলোকে কঠোর নজরদারির আওতায় আনতে হবে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি