উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত তিস্তা পানি বণ্টন চুক্তির জট খোলার সম্ভাবনা এখন দ্বারপ্রান্তে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আমন্ত্রণে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরেই তিস্তার পানি সমস্যার স্থায়ী সমাধান আসতে পারে বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবছরই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সম্ভাবনা রয়েছে। গত সোমবার মমতার আমন্ত্রণে শেখ হাসিনার সম্মতির বার্তা পৌঁছানো হয়। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলীর নেতৃত্বে ৪ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এই বার্তা নিয়ে যান কলকাতায় মমতার অফিসে।
সূত্রমতে, সময় মমতা বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের বলেছেন, তিনি শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেবেন। শেখ হাসিনা মমতার জন্য নৌকার প্রতীকের রেপ্লিকা উপহার হিসেবে পাঠিয়েছেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা গতকাল এই প্রতিবেদককে বলেছেন, এবছরই প্রধানমন্ত্রীর সফরটি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন শেখ হাসিনা ও মমতার শিডিউল নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক পর্যায়ের বৈঠকে সফরের সময়সূচি নির্ধারণ করা হবে।
ওই কর্মকর্তা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরে তিস্তার বিষয়ে সুষ্ঠু সমাধানের অনুরোধ করা হয় মমতাকে। বলা হয়, শেখ হাসিনার সফরে তিস্তার পানি সমস্যার সমাধান হবে এই প্রত্যাশা করে বাংলাদেশিরা। এসময় মমতা আশ্বস্ত করেন, তিস্তার পানিসহ অমীমাংসিত আরও অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেছেন, দিদিকে আমি বলেছি, তিস্তায় আমার উপর ভরসা রাখুন। তবে মমতা বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানির বিষয়ে জোর দেন। এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশে চলমান গুপ্ত হত্যা, রামকৃষ্ণ মিশনের ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেন।
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এই প্রতিবেদককে বলেন, তিস্তার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। গতবছরের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতার সফরেই তিস্তার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। এবার মমতা দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর সেই সম্ভাবনা আরও দৃঢ় হয়েছে। কারণ মমতা ব্যানার্জি নিজেই বলেছেন, তিনি বাংলাদেশে খালি হাতে আসবেন না। নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তার শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, নির্ধারিত শিডিউল থাকায় প্রধানমন্ত্রী সেই সফরে যেতে পারেননি। শিল্পমন্ত্রী আমীর হোসেন আমুকে পাঠান এবং মমতার জন্য তার প্রিয় ইলিশ ছিল বিশেষ উপহার। সেই শপথ অনুষ্ঠানের পর সাইড লাইনে মমতা প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিকে বলেছেন, দিদিকে বলবেন তাকে আমি সংবর্ধনা দেব। পাশাপাশি তিনি তিস্তার সমস্যা সমাধানে ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি বার্তা দেওয়া হলো। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম