খুনের আসামির সই সংসদে
প্রণব সাহা
ইদানিং জাতীয় সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে নানা তৎপরতা চোখে পড়ছে। সবুজের মাঝে থাকা সংসদ ভবন ঘিরে ফেলছে লোহার বেড়া। কিন্তু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ঢুকে পড়ল সংসদ ভবনে। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করলেন, বেরিয়েও গেলেন। যদিও টাঙ্গাইলের পুলিশ কিন্তু তাকে খুঁজে পায় না। শেরেবাংলা নগর এলাকায় অবস্থিত সংসদ ভবন কিন্তু সুরক্ষিত থাকে বিশেষ করে যখন সংসদ অধিবেশন চলে। কিন্তু পুলিশ দেখল না। হয়তো এ কারণে, আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলার আসামি আমানুর রহমান রানা ক্ষমতাসীন দলের সাংসদও বটে। তাইতো পুলিশের বিশেষ অভিযানে অনেক পরোয়ানাভুক্ত আসামিও গ্রেফতার হয়েছে কিন্তু ধরা পড়েনি এমপি আমানুর রহমান। বিনা অনুমতিতে একটানা ৯০ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত থাকলে সংসদ সদস্যপদ বাতিল হওয়ার-ই আইনি বিধান থেকে রেহাই পেতেই পুলিশের চোখের সামনেই তিনি ঢুকে গেছেন সুরক্ষিত সংসদ ভবনে। পত্রিকার রিপোর্টে পড়লাম, নিরাপত্তাকর্মীরা আমানুর রহমানের প্রবেশের সময়ই স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু সংসদের নিরাপত্তার মূল দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট এট আর্মস কিছুই জানে না বলে পত্রিকার সাংবাদিকদেরকে বলেছেন। এমনকি ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়াও জানিয়েছেন, তিনি অধিবেশনে সাংসদ আমানুর রহমানকে দেখেননি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কিভাবে আমানুর রহমান সুযোগ পেলেন তার সংসদ সদস্য পদ বাঁচানোর। আমরা জানি, স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরী আইনের কৃতি ছাত্রী। স্পিকার হিসেবেও কয়েক বছরের দায়িত্বপালনের অভিজ্ঞতা তার হয়েছে। কিন্তু হত্যা মামলার পলাতক আসামি হওয়ার পর একজন সাংসদ কি এমন প্রিভিলেজ পেতে পারেন কিনা যে সংসদ সদস্য পদ যখন পলাতক থাকার কারণে হুমকির সম্মুখিন হন। তখন তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে গেলেন দায়িত্বপ্রাপ্তদের অগোচরে। নাকি সবাই সবই জানতেন, ছিলেন কৃত্রিম চোখ বুজে।
লেখক : সম্পাদক, ডিবিসি নিউজ
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন