সন্তোষ দা’র জন্য কষ্ট লাগছে
জ.ই. মামুন
সন্তোষ দার জন্য খারাপ লাগছে। সন্তোষ মন্ডল, আমাদের সময়ের ডাকসাইটে ক্রাইম রিপোর্টার। আমরা দুষ্টামি করে ডাকতাম সন্ত্রাস মন্ডল। আমি একুশে টিভিতে এবং পরে এটিএন বাংলার রিপোর্টার আর উনি চ্যানেল আই এর। বহু অ্যাসাইনমেন্ট করেছি একসঙ্গে। খাওয়া-দাওয়া, গল্প-আড্ডা, তর্ক-বিতর্ক অনেক কিছু।
২০০৪-০৫ সালের দিকের কথা। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, তখনকার সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমরা একবার ফিলিপাইনের ম্যানিলায় গিয়েছিলাম, এশিয়ান পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের একটি প্রোগ্রামে। পিতার হত্যাকা-ের পর তখন উপনির্বাচন জিতে সদ্য এমপি হয়েছেন জাহিদ আহসান রাসেল। তিনিও ছিলেন সেই প্রোগ্রামে। আমি সন্তোষ দা আর রাসেল ভাই কাছাকাছি বয়সের হওয়ায় কত যে দুষ্টামি করেছি একসঙ্গে! সেই অ্যাসাইনমেন্টে আমাদের সঙ্গে ক্যামেরাম্যান ছিল না, তাই সন্তোষ দার পিটিসির সময় আমি ক্যামেরার কাজ করতাম, আর আমার পিটিসির সময় উনি আমার ক্যামেরাম্যান হতেন। মনে আছে, সেই সফরে শ্রদ্ধেয় শেখ হাসিনা আমাদের তিনজনকে এক রকমের জামা কিনে দিয়েছিলেন। ফিলিপাইনের ঐতিহ্যবাহী আনারসের পাতার সুতা থেকে তৈরি জামা।
আরেকবার চলচ্চিত্র নির্মাতা বন্ধু মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ম্যাড ইন বাংলাদেশ সিনেমায় অভিনয়ের জন্য দুজন রিপোর্টার বাছাই করলেন। এবারো আমি আর সন্তোষ দা। চট্টগ্রামে সেই সিনেমার শুটিং করতে গিয়েও আমাদের কত মজার অভিজ্ঞতা, স্মৃতি।
সেই সন্তোষ দা হঠাৎই মারা গেলেন নিউইয়র্কে। ডায়াবেটিসে ভুগছিলেন, তার মধ্যে ম্যাসিভ হার্ট আট্যাক! ফেসবুকে দেখে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না সন্তোষ দা নেই। অনেকদিন তার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল না, তবুও খবরটা শোনার পর থেকে বুকের মধ্যে কেমন একটা ব্যথা বাজছে। সন্তোষ দার জন্য কষ্ট লাগছে, ভয় লাগছে নিজেকে নিয়েও।
লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন