আইইউসিএনের লাল তালিকা ২৯ শতাংশ প্রাণী হুমকির মুখে
গাজী মিরান : বাংলাদেশে কোন ধরনের প্রাণীগুলো হুমকির মুখে আছে, সেই সম্পর্কে গতকাল বুধবার একটি লাল তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থা আইইউসিএন। সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী পরিবেশ ও প্রাণী বৈচিত্র নিয়ে গবেষণা করেন।
এই লাল তালিকা বা রেড লিস্ট প্রকল্পের পদ্ধতিগত নানা দিক নিয়ে ঢাকাস্থ আইউসিএন-এর কর্মকর্তা মো. সাহেদ মাহাবুব চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, এই গবেষণাটা উচ্চ মানসম্পন্ন একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণা এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞানীরা মিলে পরিবেশ ও প্রাণী নিয়ে গবেষণা শুরু করে। তাদের একটি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন আমরা অনুসরণ করছি এবং এই বিষয়টা বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায় কিভাবে প্রয়োগ করা যায় সেটা ভেবেছি। তাই বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায় প্রয়োগের জন্য ইউকে’তে আমাদের লাল তালিকার বা রেড লিস্টের মাধ্যমে কিছু গবেষকদের দিয়ে বাংলাদেশের ১৬০ জন আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
এই গবেষণা বাংলাদেশের কোন কোন জায়গায় করেছেন? জবাবে মাহাবুবু চৌধুরী বলেন, এটা আমরা সারা বাংলাদেশব্যাপী করেছি। অর্থাৎ বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যেই সব প্রাণী আছে, সেই সব প্রাণী নিয়ে কাজ করেছি। আমরা জানি যে, কিছু প্রাণী আছে সব জায়গায় পাওয়া যায়। আবার কিছু প্রাণী আছে কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় পাওয়া যায়। যার ফলে আমাদের সারা বাংলাদেশব্যাপী কাজ করতে হয়েছে।
সাহেদ মাহাবুব বলেন, আমরা এই কাজটি ২০১৩ সালে ডিসেম্বর মাসে শুরু করেছি যা শেষ হয় এই বছরের জুন মাসে। তাতে প্রায় আড়াই বছর লেগেছে এবং এই আড়াই বছরে প্রায় ১৬শ ১৯টি প্রাণী পর্যবেক্ষণ করেছি। এর মধ্যে ১৩৮ প্রজাতির মাছ, ৫৬৫টি পাখিসহ অনেক ধরনের প্রাণী আমরা পর্যবেক্ষণ করেছি সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন অনুযায়ী।
১৬শ ১৯টি প্রাণীর মধ্যে কতগুলো প্রাণী লাল তালিকায় বা রেড লিস্টের আওতায় এসেছে? উত্তরে সাহেদ চৌধুরী বলেন, এই ১৬শ ১৯টি প্রাণীর মধ্যে ভাল অবস্থানে আছে প্রায় ৫০ শতাংশ প্রাণী আর খারাপ অবস্থানে আছে প্রায় ২৯ শতাংশ প্রাণী। যাদের বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এই বিলুপ্তির মুখে রয়েছে বড় ধরনের প্রাণী যেমন, বাঘ, হাতি, বন্য মহিষসহ আরও বড় বড় প্রাণী। এদের বিলুপ্তির কারণ, এদের অনেক বেশি বড় জায়গা লাগে এবং অনেক খাবারও লাগে যা বাংলাদেশে তুলনামুলক হারে কমে গেছে। যার ফলে বাংলাদেশ থেকে এই ধরনের বড় প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ