জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা এবং ক্রসফায়ার ইস্যুতে আলোচনা প্রাধান্য পাবে আজ শুরু হচ্ছে ওয়াশিংটন সংলাপ
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র অংশীদারিত্ব সংলাপে জঙ্গি, সন্ত্রাস দমন ও নিরাপত্তা ইস্যু প্রাধান্য পাবে। গুপ্তহত্যা ও জঙ্গি দমনে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি এবং এর আলোকে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের কথা তুলে ধরবে বাংলাদেশ। আজ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে দুই দিনের অংশীদারিত্ব সংলাপ শুরু হচ্ছে।
এই সংলাপে অংশ নিতে গতকাল বুধবার পররাষ্ট্র সচিব এম. শহীদুল হকের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল ওয়াশিংটন পৌঁছান। এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে শহীদুল হক এই সংলাপে বাংলাদেশের আলোচনার বিষয় সম্পর্কে জানান, বাংলাদেশকে নিরাপদ রাখতে যুক্তরাষ্ট্র আরও ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা দিতে চায়। বিশেষ করে উগ্রবাদীদের হামলা ঠেকানোর জন্য তারা আগাম তথ্য বিনিময়ের সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ চায়। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে তাদের নাগরিক, কূটনীতিক ও মিশনের সর্বস্তরের স্টাফদের নিñিদ্র নিরাপত্তা চাইতে পারে। সচিব বলেন, আমরাও এসব নিয়ে কথা বলার প্রস্তুতি নিয়েই যাচ্ছি।
সংলাপে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের রাজনীতিবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি থমাস এ শ্যানন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ গত ১০-১৬ জুন পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব পরিচালিত জঙ্গিবিরোধী যৌথ অভিযান এবং ওই অভিযানে ১৯৪ জঙ্গির আটক, একই সময়ে অস্ত্র উদ্ধারসহ জঙ্গি দমনে নেওয়া সব পদক্ষেপের চিত্র তুলে ধরবে এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে বিশ্বে বাংলাদেশের প্রশংসার কথা তুলে ধরবে। জঙ্গি-উগ্রবাদীদের হামলা ও অব্যাহত হুমকি মোকাবিলায় বাংলাদেশ দেশি-বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তায় যে ব্যবস্থা নিয়েছে বা নিচ্ছে তা-ও তুলে ধরা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, গত বছরের শেষ থেকে চলতি মে মাস পর্যন্ত এখানে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর উগ্রবাদী হত্যাকা-গুলোর তদন্ত-অগ্রগতি জানতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এখানে মার্কিন মিশনের কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান তার বন্ধুর নৃশংস হত্যাকা- তদন্তের বিষয়েও বিস্তারিত তথ্য চায় ওয়াশিংটন। ঢাকার কর্মকর্তারা তা তুলে ধরার প্রস্তুতি নিয়ে গেছেন। সেখানে কেবল ওই একটি খুনের ঘটনাই নয়, অন্য ৩৩টি চাঞ্চল্যকর হত্যার বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করবে ঢাকা। পুলিশি তদন্তের এসব ঘটনার সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেটওয়ার্কের কোনো তথ্য না পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরবেন কর্মকর্তারা। ওই হত্যাকা-গুলোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো তথ্য থাকলে তা-ও শেয়ার করার অনুরোধ জানানো হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এই সংলাপে মূলত ৩ ধাপে আলোচনা হবে। ২০১২ সাল থেকে নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন সহযোগিতা- ওই ৩ ধাপে আলোচনা হয়ে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। সংলাপে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি