বাজেটে উপেক্ষিত আদিবাসীরা
ফারহান ফারুক : ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আদিবাসী ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের উপেক্ষা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আদিবাসীবিষয়ক সংসদীয় ককাস-এর আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা। গতকাল বুধবার রাজধানীর সিরাডাপ অডিটরিয়ামে ‘আদিবাসী ও বাজেট’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ না থাকায় এ বাজেটে তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। বর্তমান সরকারের সাফল্য বজায় রাখতে হলে এ প্রান্তিক জনসংখ্যাকে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অংশীদার করতে হবে। তাদের জন্য বাজেটে আলাদা থোক বরাদ্দ রাখতে হবে। তিনি এ বাজেটে আদিবাসী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য এক হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখার দাবি জানান। গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ আদিবাসীবিষয়ক সংসদীয় ককাস সদস্য ফজলুল হক এমপি, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, টিপু সুলতান এমপি প্রমুখ। স্বাগত বক্তব্য রাখেনÑ আরডিসি চেয়ারপার্সন এবং আদিবাসীবিষয়ক সংসদীয় ককাস-এর সমন্বয়ক ও টেকনোক্র্যাট সদস্য ড. মেসবাহ কামাল, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাস এর টেকনোক্র্যাট সদস্য সঞ্জীব দ্রং।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, এবারের বাজেটেও আদিবাসীদের জন্যে আশানুরূপ কিছু নেই। জনসংখ্যার প্রায় ৪ শতাংশ আদিবাসী যা জনসংখ্যার হিসেবে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক। আর মোট আদিবাসীর দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ প্রায় ২০ লক্ষাধিক সমতলে বসবাস করে। কিন্তু তাদের জন্যে বাজেটে গতবারের ন্যায় এবারও মাত্র ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বাজেটে একজন নাগরিকের জন্যে বছরে ২১ হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও সমতলের আদিবাসীদের জন্যে তা মাত্র ১০০ টাকা। আদিবাসীরা নানাকারণে ঐতিহাসিকভাবে শোষণ, বৈষম্য ও মানবসৃষ্ট দারিদ্র ও বঞ্চনার শিকার, তাই বরাদ্দ শতকরা হিসাবের বাইরে আরও বেশি হওয়া উচিত।
বক্তারা বলেন, আদিবাসীদের জন্যে বাজেটে পৃথক ও বিশেষ বরাদ্দ রাখা প্রয়োজন। বিশেষ করে আদিবাসী তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান ও দক্ষতা বাড়ানোর জন্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও কর্মমুখী শিক্ষা এবং চাকরির নিশ্চয়তাসহ আত্মকর্ম সংস্থান যাতে তারা করতে পারে সে জন্যে আলাদা বরাদ্দ রাখতে প্রয়োজন।
আদিবাসীদের অধিকাংশ সমতলে বসবাস করে তাই সমতলের আদিবাসীদের জন্যে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানানো হয়। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও সামাজিক ক্ষমতায়নের বাজেট খাতে আদিবাসী উপকারভোগী যাতে নিশ্চিত হয়, তার জন্যে বিশেষ নির্দেশনার দাবি জানান বক্তারা। সম্পাদনা : দীপক চৌধুরী