‘পুলিশ যত আধুনিক হচ্ছে ততই বন্দুকযুদ্ধের প্রবণতা বাড়ছে’
গাজী মিরান : বাংলাদেশে যখন পুলিশের হাতে থ্রিআর থ্রি রাইফেল ছিল তখন বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের প্রবণতা এতটা ছিল না। কিন্তু পুলিশ যত আধুনিক হচ্ছে, পুলিশের হাতে যত আধুনিক অস্ত্র আসছে, ততই বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের প্রবণতা বাড়ছে বলে মন্তব্য করছেন সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ।
গত মঙ্গলবার বাংলাভিশনের ‘নিউজ এন্ড ভিউজ’ অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, সরকার দলের মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, এটা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতা। এখানে প্রশাসনের দুর্বলতা কী? মাহফুজউল্লাহ বলেন, এই পুরো বিষয়টা এক ধরনের গণতন্ত্রের সাথে এবং আইনের সাথে চালাকি করা। আমরা যদি লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার কিছু কিছু ঘটনা সাধারণ জনগণ মনে করেছেন ভালো হয়েছে, কিন্তু সম্প্রতি ঘটনায় সাধারণের মনে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সাংবাদিক মাহফুজউল্লাহ বলেন, পুলিশ ফাহিমকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে যাওয়ার পথে ফাহিমের সঙ্গীদের সাথে পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে ফাহিমের মৃত্যু হয়। কিন্তু এখানে আমার মৌলিক প্রশ্ন হলো, পুলিশ যখন অস্ত্র উদ্ধারে গেলেন, তখন ফাহিমকে কেন সাথে নিয়ে গেলেন? ফাহিম যে স্থানে কথা বলেছে সেই স্থান কী পুলিশ চিনে না? আর যদি নাই চিনে তাহলে তিনি বা তারা কিভাবে পুলিশে চাকরি করছেন? কারণ পুলিশে চাকরি করবেন আর ঢাকার আনাচে কানাচে কিছুই চিনবেন না সেটা তো হতে পারে না। তাছাড়া পুলিশ যখন একজন আপরাধীকে নিয়ে একটা অপারেশনে যায় তখন অপরাধীকে সমস্ত সুরক্ষা পোশাক পরাতে হয় যা ফাহিমের ক্ষেত্রে হয়নি। তাই এ সব বিষয় প্রমাণ করে বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে আইনের শাসন থেকে দূরে চলে যাচ্ছে যা রাষ্ট্রের অগ্রগতিতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
মাহফুজউল্লাহ বলেন, আইনের শাসনের কথা বলা হচ্ছে অথচ বিচারহীনভাবে মেরে ফেলা হচ্ছে যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ফাহিম যতই নিকৃষ্ট অপরাধী হোক না কোন তার বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে যে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হচ্ছে এ ব্যাপারে সরকারের যুক্তি কী ছিল? সরকারের যুক্তি ছিল, আমরা ন্যায়সঙ্গত বিচারের মাধ্যমে প্রমাণ করব এবং সেই অনুযায়ী শাস্তি দিব এবং তাই করা হয়েছে। তাহলে আমরা প্রশ্ন হলো ফাহিম কি তাদের চেয়েও বড় অপরাধী? তা যদি না হয় তাহলে তাকে মেরে ফেলা হলো কেন? এবং কারণ কী?
তিনি বলেন, অভিজিৎ হত্যাকরী বলে সাতক্ষীরার এক কলেজছাত্রকে মেরেফেলা হলো যার প্রমাণ তার জাতীয় পরিচয়পত্রসহ আরও অনেক প্রমাণ আছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হলো, এতগুলো ধূম্রজাল কেন তৈরি করছে পুলিশ? পুলিশ কী অক্ষম নাকি রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত হতে পারছে না? নাকি পুলিশকে বিশেষ এক তদন্তের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে? এসব বিষয় সাধারণের মনে বিশাল বড় প্রশ্নের ভা-ার তৈরি করে। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ