সীমান্তের কাঁটাতারে বিপন্ন বন্যপ্রাণীরা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, ইউরোপের বেশ কিছু বনাঞ্চলে কাঁটাতারের দেয়াল থাকায় বন্যপ্রাণীর চলাচলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। ইউরোপের বিরাট অঞ্চল জুড়ে বনাঞ্চলে সীমান্তে প্রাচীর তৈরি হয়নি, কেবল কাঁটাতার দিয়ে ‘অস্থায়ী’ভাবে সীমানা চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। গবেষকদের মতে, এই কাঁটাতারের বেড়া হরিণ ও ভাল্লুকের মত বন্যপ্রাণীর চলাচল ব্যাহত করছে ও মৃত্যুহার বাড়িয়ে দিচ্ছে। গবেষকদের দাবিমতে, ইউরোপে প্রায় ৩০ হাজার কিলোমিটার বনাঞ্চল কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা রয়েছে। এই ‘অস্থায়ী’ কাঁটাতারের বেড়া বন্যপ্রাণীর জীবনের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে। বিবিসি
যুক্তরাজ্যের ব্যাংগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডঃ ম্যাট হেওয়ার্ড বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছিলাম, ৯/১১ এর পর সন্ত্রাসবাদ ভীতি তৈরি হওয়ায় সীমান্তে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরার প্রবণতা বাড়ছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সিরিয়া থেকে আসা শরণার্থীদের কারণেও সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে।’ উল্লেখ্য, সেøাভানিয়ান সরকার শরণার্থী ঠেকাতে ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে রেজর ওয়্যার নামের এক ধরনের কাঁটাতারের সীমানা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গবেষণায় আরও বলা হয়, পূর্ব ইউরোপ ও সেন্ট্রাল এশিয়ায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার কিলোমিটার এলাকা কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা থাকায় ভাল্লুক ও নেকড়ের মত বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ড. হেওয়ার্ড বলেন, ‘বন্যপ্রাণীগুলো শুধু যে কাঁটাতার পার হতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছে তাই নয়, বিভিন্ন অংশে বিভক্ত হয়ে গিয়ে প্রজাতির বৈচিত্র্যও হারিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আফ্রিকার সিংহের সংখ্যার দিকে তাকালে বোঝা যাবে, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের সবচেয়ে ভালো উপায় বিরাট অঞ্চলজুড়ে সংরক্ষিত ন্যাশনাল পার্ক তৈরি করে তাদের রাখা।’ গবেষণায় সরকারগুলোর প্রতি বন্যপ্রাণী চলাচলের জন্য কাঁটাতার তুলে দেওয়া অথবা আরও নিরাপদ সীমানা ব্যবস্থা চালু করারসুপারিশ রাখা হয়।