যত ষড়যন্ত্র, ততই আরও উজ্জ্বল হয়েছে আ.লীগ : শেখ হাসিনা
দীপক চৌধুরী : দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা আওয়ামী লীগ ভাঙার ষড়যন্ত্র যতবার করেছে, তত আরও উজ্জ্বল হয়েছে দল এমন মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে বৃহস্পতিবার বিকাল দলের আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
এই দলটির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, তবে আওয়ামী লীগের শেকড় এতো শক্ত, যার অবদান তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যতবার দল ভাঙার ষড়যন্ত্র হয়েছে ততবার উজ্জ্বল হয়েছে দল। আঘাত আমাদের বিরুদ্ধে বারবার এসেছে, সব আঘাত সহ্য করে আমরা এগিয়ে গেছি। হয়তো উপরের নেতারা ভুল করেছেন, তৃণমূল কখনও ভুল করেনি। সব নির্দেশনা মেনে তারা কাজ করে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাঙালির প্রতিটি অর্জনেই আওয়ামী লীগের অবদান রয়েছে, সেই ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু। দেশের প্রতিটি শহিদের তালিকায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর নাম রয়েছে। জাতির পিতা আমাদের যে আদর্শ দিয়ে গেছেন, আমরা সেই আদর্শ নিয়েই আছি। সেই ইস্কান্দর মির্জা, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান, জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া সবাই আওয়ামী লীগ ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ কারও কাছে মাথা নত করেনি, সত্য প্রতিষ্ঠা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম থেকে দলকে একবিন্দু সরাতে পারেনি কেউ। জাতির পিতা বলতেনÑ ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না। কাজেই আমরাও কখনও ভিক্ষুকের জাতি হতে চাই না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময় নীতি-আদর্শ নিয়ে থেকেছে। দীর্ঘ ২১ বছর পর যখন আমরা ক্ষমতায় আসি, তখনও সেই আদর্শ নিয়ে কাজ করেছি, এখনও দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। ব্যক্তি স্বার্থ নিয়ে যারা রাজনীতি করেন তারা হয়ত নিজেদের জন্য অনেক কিছু করতে পারেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে কখনও কিছু দিতে পারেন না। আমাদের একটাই লক্ষ্য জনগণের কল্যাণ, আওয়ামী লীগ সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছে। সেভাবেই আগামীতে কাজ করে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দলটির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে, তবে আওয়ামী লীগের শেকড় এতো শক্ত, যার অবদান তৃণমূলের নেতাকর্মীদের। যতবার এই দল ভাঙার ষড়যন্ত্র হয়েছে, ততবার উজ্জ্বল হয়েছে দল। আঘাত আমাদের বিরুদ্ধে বারবার এসেছে, সব আঘাত সহ্য করে আমরা এগিয়ে গেছি। হয়তো উপরের নেতারা ভুল করেছেন, তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতারা কখনও ভুল করেননি। সব নির্দেশনা মেনে তারা কাজ করে গেছেন।
যে সংগঠনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, সেই সংগঠনই জাতিকে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশ হবে দারিদ্র্যমুক্ত, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ সেই লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। বাঙালি জাতি যা পেয়েছে আওয়ামী লীগের কাছে থেকেই পেয়েছে। আমরা দারিদ্র্যের হার কমিয়েছি, অর্থনৈতিক উন্নয়নে এগিয়েছি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইফতার পার্টিতে বসে অজস্র মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ সালের প্রহসনের নির্বাচনে খুনি রশীদ ও হুদাকে সংসদ সদস্য করেন। এরপরেও তিনি যখন ক্ষমতায় আসেন তখন যুদ্ধাপরাধের দায়ে যাদের এখন ফাঁসি হয়েছেÑ তাদের মন্ত্রী করেছিলেন। তার আগে জেনারেল এরশাদও কম যাননি। ঠিক তারও আগে খুনিদের, দেশবিরোধীদের বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান দেশে আনেন, রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করেন। যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল তাদেরই জিয়া-খালেদা ক্ষমতায় বসান।
খালেদা জিয়া সরকারে থাকার সময় বিভিন্ন অপকর্ম করেছেন, তার অপশাসন থেকে দেশকে মুক্ত করতে আওয়ামী লীগ সংগ্রাম করেছে। সংগ্রাম করে করেই আওয়ামী লীগকে যুগে যুগে টিকে থাকতে হয়েছে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ড. অনুপম সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক প্রমুখ। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অসীম কুমার উকিল।