রুশনারা আলী ব্রেক্সিট হলে চাকরি হারাবেন বহু বাংলাদেশি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : যুক্তরাজ্যে বাঙালি এমপি রুশনারা আলী মনে করছেন, ব্রেক্সিট হলে বাংলাদেশিদের জন্য ভালো হবে না। কারণ এতে চাকরি হারাবে পাঁচ লাখ বাংলাদেশি ও জাতিগত সংখ্যালঘু। আনুপাতিক হিসাবে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটিশদের চেয়ে বাঙালিসহ অন্য অভিবাসীরাই বেশি চাকরি হারাবে। সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
রুশনারা এমপি ব্রেক্সিটের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তার যুক্তি, ১৯৭৫ সালের পর থেকে যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক ভিত মজবুতের প্রধান নিয়ামক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হওয়া। ইইউতে একক বাজারের অংশ হিসেবে যুক্তরাজ্য সবচেয়ে শক্তিশালী অবস্থান করে নিয়েছে। রয়েছে নিরাপদেও। সেই অবস্থানকে আরও সুদৃঢ় করা প্রয়োজন। সেটা করতে হলে আমাদেরকে ইইউ জোটের মধ্যেই থাকতে হবে। তিনি মনে করেন, ইইউ থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে গেলে এক ভয়ানক অর্থনীতির চাপে পড়তে হবে।
তিনি বলেন, ব্রেক্সিট হলে আমাদেরকে মন্দার ঝুঁকিতে থাকতে হবে। এই কারণে ৫ লাখ চাকরি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। তাছাড়া এখন একটি স্থিতিশীল ব্যবস্থা রয়েছে। সেই ব্যবস্থা থেকে কেন অজানা অস্থিতিশীল অন্ধকারময় পথে হাঁটতে হবে। তিনি মনে করেন, অজানা গন্তব্যের দিকে না গিয়ে বিদ্যমান ব্যবস্থায় অবস্থান করে নিজেদের প্ল্যাটফর্ম আরও দৃঢ় করার পক্ষে থাকতে হবে। তিনি বলেছেন, ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলে অর্থনৈতিক দুরাবস্থার কারণে বাংলাদেশিসহ জাতিগত সংখ্যালঘু লোকজন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইইউতে থাকার কারণেই বাংলাদেশসহ নন-ইউরোপিয়ান দেশ থেকে কারি শেফ আনতে ভিসা পাওয়া যাচ্ছে না।
রুশনারা আলী বলেছেন, কারি শিল্পের জন্মদাতা এথনিক কমিউনিটি। যুক্তরাজ্যের বাইরে থেকে দক্ষ মাইগ্রেট আনার আইনগত কড়াকড়ি ইইউতে থাকা বা না থাকার সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। এটি ক্ষমতাসীন দলের সৃষ্ট ইমিগ্রেশন নীতির একটি ভুল পলিসি। ক্ষমতাসীনরা নিজের তৈরি নীতিকে এখন অন্যের গায়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। ব্রিটেনকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য এবং বাইরে কাজের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর লক্ষ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে থেকেই যুদ্ধ করে যেতে হবে।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশি তিনজন এমপি রয়েছেন। তারা যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রাখার পক্ষে। রুশনারা ছাড়াও রয়েছেন এমপি রূপা হক ও এমপি টিউলিপ সিদ্দিক। বাঙালি প্রবাসীদের বেশিরভাগই ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে। তারা মনে করেন, জোটভুক্ত দেশগুলোতে যে হারে অভিবাসীরা আসছে তাদের চাকরির বাজারে বাঙালি তথা এশিয়ানদের দিয়ে সংকুচিত হচ্ছে। আর এই প্রভাব পড়ছে থাকার ব্যবস্থায়, চিকিৎসা ব্যবস্থায় ও শিক্ষা ক্ষেত্রেও। জোটবদ্ধ দেশগুলোর মতো সমান সুযোগ পাওয়া এথনিক মাইনোরিটির জনগণের দাবি। এছাড়াও রেস্টুরেন্ট ব্যবসা পরিচালনার জন্য দেশীয় কারি শেফ নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার ব্যাপারেও বাঙালিরা সব সময় দাবি করে আসছে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম