বদলে গেছে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের বহির্বিভাগের চিত্র
আজাদ হোসেন সুমন : বদলে গেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ)-এর বহির্বিভাগের সার্বিক চিত্র। কমে গেছে রোগীদের ভোগান্তি। সর্বত্র ছিমছাম- গোছানো, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। অথচ সরকারি হাসপাতাল মানেই উৎকট দুর্গন্ধ ময়লা-আবর্জনা, ছাড়পোকা, ব্যবহারের অনুপযোগী টয়লেট ইত্যাদি। কিন্তু না, এখন আর সে অবস্থা নেই।
গতকাল বহির্বিভাগে (মেডিসিন) কাউন্টার থেকে ৩০ টাকায় টিকেট সংগ্রহ করার পর সেখান থেকেই ৫ তলায় যেতে বলা হয়। লিফট আছে, একই সঙ্গে রয়েছে দুটো অত্যাধুনিক চলমান সিঁড়ি। ৪টি কক্ষে একই বিষয়ের চিকিৎসক। একেকটি কক্ষে ২ জন করে মোট ৮ জন। চিকিৎসকরা অনবরত রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন।
সালাম দিয়ে কক্ষে ঢুকতেই হাস্যোজ্জ্বল মহিলা ডাক্তার পাশের চেয়ারে বসতে বললেন। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগী দেখতে দেখতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। তাদের মুখে হাসির পরিবর্তে ক্লান্তির ছাপ ফুটে উঠে এবং কথা-বার্তায় বিরক্তি প্রকাশ পায়। এখানে ব্যতিক্রম।
সমস্যা শুনে ব্যবস্থাপত্র দিলেন এবং ১৫ দিন পর সাক্ষাৎ করতে বললেন।
এইতো মাত্র ৪/৫ বছর আগেও কি এমনটা চিন্তা করা গেছে? কোনো ভোগান্তি হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে নারায়ণগঞ্জের বন্দর থেকে আসা আবদুল হামিদ নামের একজন রোগী বললেন, না ভাই, ডাক্তার দেখিয়ে খুব স্বস্তিবোধ করছি। দালাল নেই, ধাক্কাধাক্কি নেই, লাইন নেই। চিকিৎসকের ব্যবহারও ভাল। চিকিৎসকদের ক্লিনিক বাণিজ্য, দায়িত্বে অবহেলা, প্রাইভেট প্র্যাকটিস আর রোগীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার না করার কথা শোনা যায় বেশি। আর এও শোনা যায় কোনো চিকিৎসক যদি রোগীর সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন, আশ্বস্ত করেন এবং আপনজনের মত ব্যবহার করেন তাহলে ওই রোগী অনেকটাই সুস্থ বোধ করেন। হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসকরা যে নজির স্থাপন করেছেন চিকিৎসা সেবায় সেটা দেশের সব চিকিৎসকদের অনুসরণ করা উচিত। সেটা সম্ভব হলেই কেবল চিকিৎসা পেশা তার মহৎ ও সেবামূলক মর্যাদা ফিরে পাবে। চিকিৎসরা ফিরে পাবে সাধারণ মানুষের ভালবাসা-শ্রদ্ধা। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম