জয়পুরহাট ছাত্রী নিবাসে কোচিং-বাণিজ্য
মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট : জয়পুরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী নিবাসকে পরিত্যক্ত দেখিয়ে ছাত্রীদের জিম্মি করে স্কুলের পাশে ওই ভবনেই স্কুল চলাকালে চলছে কোটি টাকার রমরমা অবৈধ কোচিং বাণিজ্য। বাড়তি আয়ের আশায় জেলা সদরের একমাত্র সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক ছাত্রীকে জিম্মি করে অবৈধ কোচিং বাণিজ্যের মাধ্যমে বছরে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর অর্থ লোভী শিক্ষক। কোচিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত শিক্ষকগণ এতোই প্রভাবশালী যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারে না কোন ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক কিংবা কোচিং বাণিজ্যের বিরোধী শিক্ষকরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা লঙ্ঘন করে স্থানীয় প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে প্রভাবশালী ওই শিক্ষকরা স্কুল চলাকালীন সময়ে স্কুলের পাশেই আবাসিক ভবনে প্রতি শিফটে ৫টি আবাসিক কক্ষে গাদাগাদি করে শ্রেণী কক্ষের মতো অবৈধ কোচিং বাণিজ্য করছেন কিছু শিক্ষক। নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি শ্রেণীতে ৪০ জনের বেশি শিক্ষার্থী না রাখার কথা বলা থাকলেও সরে জমিনে গিয়ে দেখা যায় আবাসিক হলের প্রতিটি কক্ষে গাদাগাদি করে প্রায় ৬০/৭০ জন ছাত্রীকে নিয়ে ক্লাশ করছেন কতিপয় শিক্ষক। কোচিং করানো হচ্ছে এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. আমান উদ্দিন ম-ল।
জয়পুরহাট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই তবে স্কুল চলাকালে স্কুলের পাশে আবাসিক ভবনে কোচিং করানো একটা গর্হিত কাজ। এটা তারা করতে পারে না। তাছাড়া একজন শিক্ষক ফুল টাইম স্কুলে থাকবে। এক বেলা স্কুল ও এক বেলা কোচিং করাবেন এমনটা হতে পারে না।
তবে সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগ পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
ওই বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক আ. রহিম বলেন, কোচিংয়ের বিষয়টি আমার জানা নেই, এভাবে স্কুলের নিকটবর্তী আবাসিক হলে কোচিং করানো আইন পরিপন্থি। আমি বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।
এ ব্যাপারে রাজশাহী উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের স্কুল ইন্সপেক্টর দেবাশীষ রঞ্জন রায় এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্কুল টাইমে কোনভাবেই কোন শিক্ষক কোচিং করাতে পারবেন না। যদি কেউ অনৈতিকভাবে কোচিং করেন তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরো বলেন আবাসিক হলের বর্তমান অবস্থা জেনে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।