কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে অবৈধ স্থাপনা
এম আমান উল্লাহ, কক্সবাজার : কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের লিংকরোড থেকে উখিয়া-টেকনাফ ৭৯ কি.মি. সড়কপথে অন্তত ১১টি অবৈধ হাট-বাজার গড়ে উঠেছে। প্রতিনিয়ত এসব হাটবাজার বসে থাকলেও পবিত্র রমজান মাসে এর তীব্রতা অনেকাংশে বেড়ে গিয়ে প্রতিটি পয়েন্টে প্রচ- যানজটের কবলে পড়ে জনভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। কথিত হাট-বাজার ইজারাদার সরকারের নির্ধারিত হাট-বাজারের বাইরে বাজার বসিয়ে প্রতিদিন বেআইনীভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করে গেলেও দেখার কেউ নেই।
সরেজমিন দেখা গেছে, কক্সবাজারের লিংকরোড থেকে টেকনাফ পর্যন্ত এ সড়কটি অত্যন্ত সংকুচিত। উক্ত সড়কে ১১টিরও অধিক বেশি স্থানে সড়ক জুড়ে উভয় পাশে অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে হাট-বাজার। যে কারণে এসব স্থানে প্রায় সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। লিংকরোড থেকে টেকনাফ যেতে স্বল্প দৈর্ঘ্যরে এ সড়কে দেড়-দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা নয়। অথচ সড়কের উভয় পার্শ্বে হাট-বাজারসহ অবৈধ স্থাপনার কারণে এ সড়কটি পাড়ি দিতে তিন থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা সময় অপচয় হচ্ছে বলে যাত্রী, বাস মালিক, শ্রমিকদের অভিযোগ।
মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়া, টেকনাফ ও নাইক্ষ্যংছড়ির কিছু অংশের প্রায় ৬ লক্ষাধিক লোকজনের কক্সবাজার সহ সারাদেশে যোগাযোগ রক্ষার একমাত্র মাধ্যম হওয়ায় এ সড়কটি অতীব গুরুত্ব বহন করে আসছে।
সাধারণ যাত্রী ছাড়াও টেকনাফ স্থল বন্দর, সেন্টমার্টিন, শাহ পরীর দ্বীপ, ইনানীসহ অনেক পরিচিত পর্যটন স্পট এখানে বিদ্যমান থাকায় এ সড়কে প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়া করছে দেশি-বিদেশি অসংখ্য পর্যটক। তাই দেশে-বিদেশে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের পরিচিতি বিদ্যমান থাকলেও সড়কটি বেদখল হয়ে যাওয়ার কারণে দুর্ভোগে পড়েছে পর্যটকসহ অসংখ্য যাত্রী সাধারণ।
এ সড়কের প্রায় ১১টিরও অধিক স্থানে সড়কের দুই পাশে এমনকি সড়ক দখল করেও নিয়মিত হাট-বাজার বসার কারণে স্কুল, কলেজ, মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের যেমন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, তেমনি সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলোকে অনেক যানজট পেরিয়ে সময় অপচয় করে লক্ষ্যস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে। এছাড়াও উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী স্থলবন্দর থেকে চালান হয়ে যানবাহনগুলোকে নির্বিঘেœ চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দূরপালার বাস চালক আব্দুল মজিদ (৪৫), জীপ চালক মুর্তজা, টেকনাফ-কক্সবাজার স্পেশাল সার্ভিসের চালক শামশুল আলমসহ শ্রমিক সমিতির নুর মোহাম্মদ বাদশা, ট্রাক-মিনি ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান সহ অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাঈন উদ্দিন জানান, তিনি এখানে যোগদান করার পরই সড়কের উভয় পাশ থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছিল। তিনি বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি আন্তরিক না হলে স্থানীয় পরিবেশ মানসম্মত রাখা কারো পক্ষে সম্ভব নয়।
কক্সবাজার সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া জানান, অবৈধ হাট-বাজার বসেছে তা চিহ্নিত করছে। ঈদের পরেই ওইসব অবৈধ হাট-বাজারগুলোর উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।