বরিশাল নদীবন্দরে বসানো হচ্ছে সিসি
শামীম আহমেদ, বরিশাল : যাত্রী সাধারণসহ সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বরিশাল লঞ্চঘাট অর্থাৎ নদী বন্দরে জরুরি ভিত্তিতে ঈদের আগেই বসানো হচ্ছে ১৬টি সিসি ক্যামেরা।
চলতি মাসের মধ্যেই এসব ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে। পাশাপাশি স্পেশাল সার্ভিসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তদারকির জন্য থাকবে দুটি মেটাল ডিটেক্টর গেট। পাশাপাশি র্যাব-পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা বন্দর তদারকি ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও যাত্রীসাধারণের সার্বিক সহযোগীতার লক্ষে ও বন্দরের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্কাউট ও গার্লস গাইডের সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন।
এ বিষয়ে বরিশাল নৌ- বন্দর কর্মকর্তা এবং নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপ-পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সিসি ক্যামেরা বসানোর পাশাপাশি এবারের ঈদ বর্ষাকাল হওয়ায় এবং পল্টুনে সংস্কার কাজ চলায় যাত্রীদের বসার জন্য টার্মিনাল ভবনের ভেতরে ও সামনে চেয়ার ও প্যা-েল করে দেয়া হবে। নির্দিষ্ট স্থানের পর আর যানবাহন চলাচল করতে দেয়া হবে না। টার্মিনালের সামনের সড়কে ওয়ানওয়েতে যানবাহন চলাচলের পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
তিনি আরো জানান, পাশাপাশি ঈদের ১০ দিন আগে ও ১০ দিন পরে প্রতিবারের মতো এবারও যাত্রীবাহি নৌ-রুটে বাল্কহেড, ট্রলারসহ অবৈধ নৌ-যান চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তার জন্য বিষয়টি নৌ পুলিশসহ নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের কর্মকর্তারা জোরদারভাবে মনিটরিং করবেন। অপরদিকে বরিশাল নগরীর নতুল্লাবাদ ও রুপাতলীতে অবস্থিত দুটি আন্তজেলা বাস টার্মিনাল এবং নতুল্লাবাদের বিআরটিসির বাস ডিপোতে সিসি ক্যামেরা বসানোর এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ হাতে নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তবে এসব স্থানে স্কাউট-গার্লস গাইডের সদস্যরা থাকার বিষয়ে এখনো নিশ্চিত না হওয়া গেলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাকধারী সদস্যদের পাশাপাশি থাকছে সাদা পোশাকে পুলিশ বাহিনীর সদস্য। নতুল্লাবাদ বাসস্ট্যা-ে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব আহম্মেদ জানান, তারা এ বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা গত বছর সিটি কর্পোরেশনে জানিয়েছেন, তবে তাদের নিজ উদ্যোগে সিসি ক্যামেরা বসানোর কোন চিন্তা ভাবনা নেই।
তিনি বলেন, টার্মিনালের একাংশে বৃষ্টির পানিতে কাদার সৃষ্টি হয়েছে, এখন বাস রাখতেই তারা হিমশিম খাচ্ছেন। টার্মিনালের ওই অংশের উন্নয়ন প্রয়োজন নয়তো ঈদে কষ্টের শেষ থাকবে না। একই কথা জানিয়েছেন পটুয়াখালি মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন। তিনি জানান, রুপাতলী বাস টার্মিনালে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন সভায় তারা দাবি জানিয়েছেন, তবে এখনো কোন সুফল পাওয়া যায়নি।
এদিকে বরিশালের এই দুই বাসস্ট্যা- থেকে আন্তজেলা ও পার্শবর্তী জেলায় যাত্রীদের সেবা দেয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। রুপাতলী বাস টার্মিনাল থেকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ ও পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, খুলনা জেলায় যাত্রীসেবা দিতে ১৬০টির মতো বাস প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালি মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন। বরিশাল বিআরটিসি বাস ডিপোর ৪২ টি বাসের মাধ্যমে ঈদে যাত্রীসেবা দেয়া হবে। এরমধ্যে ১০ টি বাসই বরিশাল থেকে মাওয়া রুটে চলাচল করবে। তবে বাসের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেণ বরিশাল বিআরটিসি বাস ডিপোর ম্যানেজার মো. জামিল হোসেন। তিনি আরো জানান, ডিপোতে সিসি ক্যামেরা না থাকলে নিজস্ব জনবল, কৌশল ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সহযোগীতায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। অপরদিকে বরিশালের আভ্যন্তরীন বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ, মুলাদী, হিজলা, উজিরপুর, আগৈলঝাড়া, গৌরনদীসহ মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর রুটসহ বরিশাল-মাওয়া রুটে যাত্রীসেবা দিতে আড়াইশতাধিক বাস প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা বাস মালিক গ্রুপের সভাপতি আফতাব আহম্মেদ।