• প্রচ্ছদ
  • আমার দেশ
  • আমাদের বিশ্ব
  • খেলা
  • ইসলামি চিন্তা
  • অমৃত কথা
  • বিনোদন
  • আজকের পএিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
  • নগর সংস্করণ
  • মিনি কলাম
  • খ্রিস্টীয় দর্পণ
  • প্রবারণা পূর্ণিমা

অমৃত কথা

রথযাত্রা : এক দিব্য অনুভবের উৎসব

প্রকাশের সময় : June 25, 2016, 12:00 am

আপডেট সময় : June 24, 2016 at 11:23 pm

ৎ শ্রীরাম প্রসাদ চক্রবর্তী

রথযাত্রা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের গর্ব করার মতো অন্যতম মহোৎসব। হাজারো বছরের প্রাচীন এ রথযাত্রা মহোৎসবের প্রচলন হয় ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের জগন্নাথপুরীতে। বিভিন্ন পুরাণ যেমন ব্রহ্মপুরাণ, পদ্মপুরাণ ও স্কন্দপুরাণের উৎকল খ-ে রথযাত্রা উদ্যাপনের চমৎকার বর্ণনা পাওয়া যায়।
প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে রথ শুরু হয়। কিন্তু রথযাত্রার প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় বৈশাখ মাসের অক্ষয় তৃতীয়া তিথি থেকেই। রথযাত্রার এক পক্ষকাল আগে পালিত হয় জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা। রথে ভগবান শ্রীজগন্নাথ তার অগ্রজ শ্রীবলরাম ও অনুজা শ্রীসুভদ্রাদেবীকে নিয়ে পৃথক তিনটি সুসজ্জিত রথে আরোহণ করেন। শ্রীজগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ (অর্থাৎ তুমুল হর্ষধ্বনি), শ্রীবলদেবের রথের নাম হলধ্বজ (অর্থাৎ যার রথে হলের চিহ্ন থাকে) এবং শ্রীসুভদ্রাদেবীর রথের নাম দর্পদলন (যা সমস্ত অহঙ্কার চূর্ণ করে)। রথযাত্রার দিন শত সহস্র ভক্ত তাদের রথ টেনে পুরীর শ্রীমন্দির থেকে প্রায় দুমাইল উত্তর পূর্বে অবস্থিত গু-িচা মন্দিরে নিয়ে যান। সেখানে সাতদিন অবস্থানের পর ভগবান শ্রীজগন্নাথ তার অগ্রজ ও অনুজাকে নিয়ে সেই রথেই শ্রীমন্দিরে প্রত্যাবর্তন করেন।
রথযাত্রা মহোৎসবের অন্তনির্হিত তাৎপর্য অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু পুরীতে লীলাবিলাস কালে ব্রজবাসী সাধারণ ভক্তদের এই মনোভাব স্বীকার করে রথযাত্রা উদ্্যাপন করতেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অগণিত ভক্তগণ প্রতি বছর জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উদ্যাপন করে থাকেন। রথযাত্রার দিনে ভগবান শ্রী জগন্নাথ, শ্রী বলদেব ও সুভদ্রা মহারানী ভক্তাভক্ত নির্বিশেষে দুঃখক্লিষ্ট সকলকে উদ্ধার করতে একত্রে রাজপথে বের হন। শ্রী নারদপুরাণে বর্ণিত হয়েছেÑ ‘রথে চ বামন দৃষ্টা পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে’ অর্থাৎ রথারূঢ় ভগবানকে শুধু দর্শনের মাধ্যমে জন্ম-মৃত্যুর চক্র অতিক্রম করা যায়। ভগবান শ্রী জগন্নাথ এতোই উদার যে তিনি ভক্তাভক্ত নির্বিচারে সকলকে কৃপা করতে স্বয়ং রাজপথে নাম-রূপ-গুণ কীর্তন করতে পারে, মহাপ্রসাদ সেবনের সুযোগ পায়। এই ভগবদসেবা ব্যক্তির হৃদয়ের জড় কলুষ দূরীভূত করে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি তার চিত্তকে আকৃষ্ট করে।
আজ শুধু পুরীতেই নয়, সারা বিশ্বব্যাপী অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণভাবে শ্রীজগন্নাথদেবের রথযাত্রা উদ্্যাপিত হচ্ছে। এর মূল কৃতিত্ব ‘আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইস্্কন)’ এর প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রীল এ. সি. ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের। ইস্্কন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বিশ্বের সব বড় শহরে রথযাত্রা মহোৎসব উদ্্যাপন শুরু হয়।
ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে নিউইয়র্ক, বার্মিংহাম, ডাবলিন, বুদাপেস্ট, মেলবোর্ন, মন্ট্রিল, প্যারিস, সিঙ্গাপুর, টরেন্টো, কুয়ালালামপুর, ভেনিস প্রভৃতি শতাধিক শহরে বর্তমানে রথযাত্রা উদ্্যাপিত হচ্ছে। ১৯৬৭ সালের ৯ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরে শ্রীল প্রভুপাদের উদ্যোগে সর্বপ্রথম রথযাত্রা মহোৎসব উদ্যাপিত হয়। এই মহোৎসব এতটাই জনপ্রিয় হয়, ১৯৭৫ সালে সানফ্রান্সিসকো শহরের মেয়র এক শুভেচ্ছা বাণী প্রদান করেন। বিশ্বব্যাপী স্বতঃস্ফূর্তভাবে উদ্যাপিত এ রথযাত্রা থেকে পরিষ্কারভাবে উপলব্ধি করা যায়, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের প্রতি প্রেমভক্তি পৃথিবীতে যে ঐক্য ও সৌভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে তা অন্য প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুঃসাধ্য।
লেখক : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পাদক

নাসিমা খান মন্টি

09617175101, 01708156820

[email protected]

১৩২৭, তেজগাঁও শিল্প এলাকা (তৃতীয় তলা) ঢাকা ১২০৮, বাংলাদেশ। ( প্রগতির মোড় থেকে উত্তর দিকে)