জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিজ্ঞা বার্লিনের
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জার্মানির রাজধানী বার্লিনও জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার বার্লিনের সংসদে কয়লা, গ্যাস ও তেল কম্পানিতে আর কোনো অর্থ বিনিয়োগ না করার ব্যাপারে ভোটাভুটির মাধ্যমে একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রিয়া নভোস্তি
নতুন এই বিনিয়োগ নীতিতে ২০৫০ সালের মধ্যেই জার্মানির রাজধানী বার্লিনকে পুরোপুরি কার্বনমুক্ত করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ওই নীতির আওতায় বার্লিনের পেনশন ফান্ডের যে ৮৫২.৮ মিলিয়ন ডলার জার্মান তেল কম্পানি আরডব্লিউই এবং ই.ওএন-এর শেয়ারে বিনিয়োগ করা আছে তা তুলে আনা হবে।
এর এক সপ্তাহ আগে সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমও জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার ঘোষণা দেয়। বার্লিনসহ মোট ৭টি পশ্চিমা শহর এখন জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে। বাকী শহরগুলো হলো- প্যারিস, কোপেনহেগেন, অসলো, সিয়াটল, পোর্টল্যান্ড ও মেলবোর্ন।
বার্লিনের এই সিদ্ধান্তকে পরিবেশবাদিদের জন্য একটি বড় বিজয় হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। গত ডিসেম্বরে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনের পর থেকেই পরিবেশবাদিরা জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচারণা শুরু করে।
এর প্রভাবে এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়, পেনশন ফান্ড ও ধর্মীয় সংগঠনসহ ৫০০-রও বেশি প্রতিষ্ঠান জীবাশ্ম জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ না করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। এদের সামষ্টিক পুঁজির পরিমাণ প্রায় ৩.৪ ট্রিলিয়ন ডলার।
পরিবেশবাদিরা জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলোকেও তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য সংস্কারের জন্য কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চাপ দিচ্ছে। ওদিকে বিশ্ব রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দও নাটকীয়ভাবেই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে চাইছেন। এছাড়া এখন আর কোনো উপায়ও নেই। কারণ কার্বন নিঃসরন না কমালে চলতি শতকের শেষ নাগাদ বিশ্ব তাপমাত্রা আরো ২ ডিগ্রিরও বেশি বাড়বে। এতে বিশ্ব জলবায়ু এমন ভাবে বদলে যাবে যে, মানব সভ্যতার ভবিষ্যতই হুমকিতে পড়ে যেতে পারে।
জার্মানি অবশ্য গত এক দশক ধরেই জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছে। ঊহবৎমরববিহফব নীতির ভিত্তিতে জার্মানি পুরোপুরি পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি ভিত্তিক অর্থনীতি গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।
২০১৪ সালে ইউরোপের অর্থনৈতিক পাওয়ার হাউজ হিসেবে পরিচিত জার্মানির জ্বালানি সরবরাহের ২৬.২ শতাংশই এসেছে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎস থেকে। জার্মান তথ্য সাংবাদিকদের একটি গ্রুপ পরিচালিত প্রকল্প স্টর্ম রিপোর্ট এই হিসেব দিয়েছে।
জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিতকরণে প্রচারণা চালায় এমন একটি সংগঠন হলো কেএল ফিলিসিটাস ফাউন্ডেশন। গত সপ্তাহে বাণিজ্য বিষয়ক জার্মান পত্রিকা হ্যান্ডেলসব্ল্যাট এর কাছে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চার্লি ক্লেইজনার বলেন, ‘আমরা এখন আর একা নই। পরবর্তী প্রজন্মও এখন এ ব্যাপারে আমাদের সঙ্গে যোগ দিচ্ছে।’