ব্রেক্সিট : বাংলাদেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে যুক্তরাজ্য আলাদা হওয়ায় বাংলাদেশে রপ্তানির উপর সাময়িকভাবে হলেও বিরূপ প্রভাব পড়বে। কারণ বাংলাদেশ বর্তমানে ইইউর বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত পণ্য রফতানি করে। ইউরোপের অনেক দেশেই বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাজ্যের মধ্য দিয়ে যায়। তাছাড়া জোট থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় এখন যুক্তরাজ্যের সঙ্গেও বাংলাদেশকে নতুন করে আলোচনা করতে হবে। কূটনৈতিক মহল ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি ছাড়াও যুক্তরাজ্যের এই বেরিয়ে যাওয়ার ফলে দেশের আর্থিক ও রাজনৈতিক খাতেও প্রভাব পড়বে। কারণ এই ঘটনায় আন্তর্জাতিক রাজনীতিকে নতুন মেরুকরণ হবে। ফলে বাংলাদেশের জন্য নতুন করে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে হিসাবে বসতে হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক বাণিজ্যসংক্রান্ত কর্মকর্তা জিল্লুল হাই রাজি বলেছেন, আমি মনে করি এই ঘটনার ফলে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যের উপর বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ইইউ বাজারে বাংলাদেশের বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ইউরো যা রপ্তানির অর্ধেকের বেশি । কাজেই এখন এই দর কষাকষিটা হয়তো নতুন করে করতে হবে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. তৌফিক আলী বলেছেন, বাংলাদেশের উপর বাণিজ্যিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক প্রভাব পড়বে। বর্তমানে ইইউর বাজারে রপ্তানিতে শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা পায় বাংলাদেশ। আলাদা হয়ে যাওয়ায় যুক্তরাজ্য সেই সুবিধা রাখবে কিনা তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে এখন দ্বি-পক্ষীয়ভাবে। তিনি আরও বলেন, এরমধ্যে যদি যুক্তরাজ্য আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে তাহলে বাংলাদেশের জন্য এটি নতুন পরিস্থিতি।
অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য উপকারী হবে না। আবার এও বলা যাবে না, বাংলাদেশের রপ্তানি সুবিধা চলে যাবে। কেননা ব্রিটিশ সরকারের উন্নয়ন নীতিতে বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে এই সুবিধা দেওয়ার কথা আছে। দেবপ্রিয় বলেন, রপ্তানিতে পরিবহন, বিমা ও আর্থিক ব্যয় বাড়বে। আবার ইউরো দুর্বল হয়ে গেলে বাংলাদেশের রপ্তানির আয়ে তার বিরূপ প্রভাব পড়বে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বাড়ছে না। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হলে খারাপই হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, বর্তমানে মানবাধিকারসহ অন্যান্য রাজনৈতিক ইস্যুত ইইউর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যুক্তরাজ্যও বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণ করে। আলাদা হওয়ার ফলে এ বিষয়ে নতুন করে আলাপ করতে হবে। যুক্তরাজ্য থেকে সাহায্য কীভাবে আসবেÑ তাও নতুন করে নির্ধারণ করতে হবে। আলাদা হওয়ার পর তাদের কূটনৈতিক পলিসি কী হবে, সেটাও একটা বড় ব্যাপার। কাজেই একটা সেট করা সিদ্ধান্তকে আবার নতুন করে ঠিক করতে হবে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম