অনুমতির তোয়াক্কা না করেই খিলগাঁওয়ে খেলার মাঠে মেলা
ফয়সাল খান : খিলগাঁওয়ে জোড়পুকুর খেলার মাঠ দখল করে চলছে জামদানি রপ্তানি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা। রমজানের প্রথম দিক থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। নির্বাচনের আগে ও পরে ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন একাধিকবার খেলার মাঠ দখল মুক্ত করার কথা বললেও দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে খেলার মাঠগুলো।
সিটি কর্পোরেশনের মালিকানায় থাকা ১২ মাঠের মধ্যে যে ৫টি মাঠ সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রয়েছে খিলগাঁওয়ে জোড়পুকুর মাঠ তার একটি। খিলগাঁও রেলগেট থেকে একটু সামনেই জোড়পুকুর খেলার মাঠ। সরেজমিনে দেখা যায়, মেলার সাইনবোর্ডে আয়োজক জামদানি ম্যানুফেকশ্চারস এন্ড এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমইএ) এবং পৃষ্ঠপোষক হিসাবে ২০/২০০০ রেজি: নং উল্লেখ করে এবিসিসিআই এর নাম রয়েছে।
এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিলপাপাড়ার এই মাঠে প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ ও পাইওনিয়ার অনেক ক্লাব এই মাঠে অনুশীলন করে। প্রতিদিন বিকেলে এলাকার প্রায় শতাধিক তরুণ যুবক এই মাঠে খেলাধূলা করে। এছাড়াও সকাল-বিকাল বৃদ্ধ ও অসুস্থ লোকজনও ব্যায়াম করেন এ মাঠে। রমজান শুরুর আগে থেকেই মাঠে খেলা বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছে এলাকাবাসী। এলাকার বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রোজার ২ দিন আগে থেকে মাঠে বাঁশ রাখা হয়। এরপর থেকেই খেলা বন্ধ। মেলার স্টল বানাতে গিয়ে মাঠের অনেক জায়গা গর্ত করে ও ইট বসিয়ে নষ্ট করা হয়েছে বলে জানায় তারা।
এসময় কথা হয় এই মাঠে নিয়মিত খেলাধূলা করা কয়েক জনের সাথে। তারা জানায়, প্রতিদিন বিকেলে এখানে আমরা খেলতাম। রোজার সময় আমরা বিকেলে ব্যাডমিন্টন খেলি। এসময় স্কুল বন্ধ থাকায় বাচ্চারাও বেশি খেলতে আসত বলে জানায় কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থী মিনহাজ। সহপাঠিরা মিলে রোজার বন্ধের সময় বিভিন্ন টূর্নামেন্ট আয়োজন করত তারা।
ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা খালিদ আহমেদ বলেন, মেলার জন্য একটি আবেদন পাওয়া গেছে। তবে এখনও আমরা অনুমোদন দেইনি।
পুলিশ হেড কোয়ার্টারের চিঠি পেয়ে শর্তসাপেক্ষে মেলার নিরাপত্তায় সহযোগিতার কথা জানান খিলগাঁও থানার ওসি কাজী মইনুল ইসলাম।
এদিকে মেলার আয়োজক কমিটির সাথে নিজের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ওয়াহিদুল হাসান মিল্টন জানান, তার কাছে জামদানি ও তাঁত মেলার অনুমতির জন্য লোকজন এসেছিল। পরে তিনি তাদের সিটি কর্পোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ থেকে অনুমতি নেয়ার পরামর্শ দেন। সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি না নিয়ে প্রায় ২০ দিন ধরে এ মেলা কিভাবে চলছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ওয়ার্ডে তো আর আমি একা থাকি না, আমার চেয়ে শক্তিশালী কেউ থাকতে পারে। তবে আমার জানামতে সিটি কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে বিজেএমইএ এ মেলা করছে। এদিকে, ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ওই মাঠে মেলার অনুমতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা দক্ষিণের সহ: সম্পত্তি কর্মকর্তা শামসুল ইসলাম।
মাঠের ভিতরে থাকা মেলার অফিস কক্ষের কেউই এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে ওই কক্ষে থাকা একজন জানান, অনুমতি নিয়েই মেলা করছেন তারা। এ ব্যাপারে বেশ কিছুদিন ধরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে।