এসপির স্ত্রী মিতু হত্যাকান্ড রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে পুলিশ
আটক ৪ খুনি
নিজস্ব প্রতিবেদক : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকা-ের ঘটনায় অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে শুরু করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তারা রয়েছেন ঘটনার রহস্য উন্মোচনের দ্বারপ্রান্তে। এরই মধ্যে ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মিতু হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের চালকও। ওই চালকই ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী। মিতু হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে চাক্তাই রাজাখালী থেকে বাকলিয়া থানার তালিকাভুক্ত এক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁন্দগাঁও ও বাকলিয়া থানায় ১৬টি মামলা রয়েছে। র্ঙ্গাুনিয়া থানার একটি গ্যারেজ থেকে আটক হয়েছে আরও দুজন। তারা হত্যাকা-ে ব্যবহার করা চোরাই মোটরসাইকেলটি বিক্রি করেছিল। ওই সূত্রে পুলিশ মিতু হত্যাকা-ের আলো দেখতে পেয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
তবে সিএমপি সদর দফতর থেকে এ বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। অতি স্পর্শকাতর এ হত্যাকা-ে সম্প্রতি জড়িত সন্দেহে আটকদের বিষয়ে পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার বলেছেন, অনেক অপেক্ষা করেছেন, আর দু-একদিন অপেক্ষা করুন। আগে আমরা নিশ্চিত হই, তারপর আপনাদের জানাব। আগামী দু-একদিনের মধ্যে ভালো খবর দেওয়ার কথা জানান কমিশনার।
পুলিশ ধারণা করছে পেশাদার খুনিরা এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে। ঘটনায় সাতজনের অধিক একটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টিম অংশ নিয়েছে। তবে মিতুকে তারা কেন খুন করেছে তা এখনও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি। টানা এক সপ্তাহ অভিযান চালিয়ে মহানগর ও জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সন্দেহভাজন ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে মোটরসাইকেলচালক ছাড়া মিতুকে ছুরিকাঘাত ও গুলি ছোড়া ব্যক্তিও রয়েছে। পাঁচজনের মধ্যে চারজনের বাড়ি রাঙ্গুনিয়া ও একজনের বাড়ি হাটহাজারীতে। এর মধ্যে দুজন ২০১২ সালে রাঙ্গুনিয়া সংঘটিত দুটি হত্যামামলার আসামি। তারা এ হত্যামামলায় কারাগারে ছিলেন দীর্ঘদিন। মিতু হত্যায় ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি বোয়ালখালী থেকে চুরি করে লালু নামে একজন পেশাদার মোটরসাইকেল চোর। দুই হাত ঘুরে গাড়িটি চলে যায় রাঙ্গুনিয়া রাণীরহাটের একটি মোটরসাইকেলের গ্যারেজে। দুই ভাইয়ের মালিকানাধীন ওই গ্যারেজ থেকে গাড়িটি কিনেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী ছিলেন। ঘটনার কয়েকদিন আগে ভাইয়ের কাছ থেকে গাড়িটি নগরীতে নিয়ে আসেন হেলমেট পরা সেই মোটরসাইকেল আরোহী। আটকদের অতি গোপনীয়তার মাধ্যমে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে সূত্র জানায়। মিতু হত্যাকা-ের পর হাটহাজারী থানার ফরহাদাবাদ এলাকার মুছাবিয়া দরবার শরীফ থেকে আবু নসর গুন্নু ও বায়েজিদ থানার অক্সিজেন এলাকা থেকে শাহ জামান রবিন নামে দুইজনকে গ্রেফতার করেছিল নগর পুলিশ। পুলিশ দাবি করেছিল মিতু হত্যায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে রিমান্ডে আনার পরও তাদের কাছ থেকে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় পরিবর্তন করা হয় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার সব কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয় নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার মোকতার হোসেনকে। মিতু হত্যাকা- নিয়ে গত ২০ দিনেও তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় পুলিশ সদর দফতর নাখোশ সিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর। এ কারণে এবার সিএমপি পুলিশ কমিশনার ও তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পুরোপুরি নিশ্চিত হয়ে গণমাধ্যমকে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে সূত্র জানায়।