দীপক চৌধুরী : সারাদেশের কারাগারগুলোতে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যেরভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে কারা কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার রাত থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
কারাগারের একটি সূত্র জানিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই একাধিক পেশাদার সন্ত্রাসীচক্র ঢাকা, খুলনা, কুমিল্লা, সিলেট, যশোর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইলসহ কয়েকটি কারাগারের চারপাশে ঘুরে গেছে। তারা সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে। এর সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে বলে ওই সূত্রে জানা গেছে।
সারাদেশে ৬৮ কারাগার রয়েছে কিন্তু অধিকাংশ কারাগারেই জেলকোড মেনে চলার সুযোগই নেই।
সূত্রমতে, গতরাতে কারাগারে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারির ঘটনার আগে-পরে সবিস্তারে খবরাখবর জানার চেষ্টা করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। মন্ত্রীর কাছে থাকা তথ্যেরভিত্তিতে দেশের বিশেষ কয়েকটি কারাগারের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন। রাতে কারাগারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উচ্চপদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বাসভবনে বৈঠক করেছেন। সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থা রাখার জন্য আইজি প্রিজনকে নির্দেশ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে সরকার দেখছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। কারাগারের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারের উচ্চমহল থেকেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে।
কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া তথ্যেরভিত্তিতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রেড অ্যালার্ট জারি থাকা অবস্থায় কারাগারে থাকা বন্দিদের খাবার, কারাগারে আসা কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। কারাগারে দর্শনার্থীরা তল্লাশির পর বন্দিদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এছাড়া কারা ফটকের সামনে বহিরাগত কেউ ঘোরাফেরা করতে পারবে না। কারাগারের ভেতরে-বাইরে দায়িত্বরত ব্যক্তিরা যদি দায়িত্বে অবহেলা করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা গেছে, সারাদেশে ৩৪ হাজার ৩শ বন্দিধারন ক্ষমতাসম্পন্ন কারাগার রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে প্রায় ৭৪ হাজার বন্দি রয়েছে দেশের কারাগারগুলোতে। শুধু ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারেই বন্দিধারণ ক্ষমতা ২ হাজার ৬৮৪। কিন্তু সাড়ে সাত হাজার বন্দি রাখা হয়েছে এ কারাগারে। সংসদের রোববারের অধিবেশনে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, জেল কোড অনুযায়ী প্রতিজন বন্দির শোয়ার জায়গা ৩৬ বর্গফুট হিসেবে কারাগারে ধারণক্ষমতা নির্ধারিত হয়। অধিকাংশ কারাগারে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ বা তিনগুণ বন্দি অবস্থান করছে।