দাদা, এ বড় অসময়ে প্রস্থান আপনার
প্রণব সাহা
বিনয়ের অবতার বলে বাংলায় যে প্রবাদ আছে, তার আক্ষরিক ইতিবাচক প্রতিভু চোখের সামনে যে কজনকে দেখি, রণজিৎ দাদা ছিলেন তাদের মধ্যে সবার চেয়ে এগিয়ে। হ্যাঁ সাবেক সচিব জনপ্রিয় লেখক রণজিৎ বিশ্বাস ছিলেনই বলতে হবে, কারণ তিনি আর নেই আমাদের মাঝে। অতীত হয়ে গেছেন মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে।
ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম গিয়েছেন গতকাল। আজ সন্ধ্যায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল একটা বিয়ের অনুষ্ঠানে। না আর কোথাও যাবেন না প্রিয় রণজিৎ দা। ফিরেও আসবেন না। কারণ না ফেরার দেশে এখন তার অবস্থান।
দুপুরের খাবারের পর বন্ধু অনুপ সাহাকে ডেকেছিলেন চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে। বন্ধুর ডাকেও সাড়া দেননি তিনি। মোবাইল বাজছিল, ধরেননি দাদা। দরজা ভেঙে যে রণজিৎ বিশ্বাসকে পাওয়া গেল তার জন্য প্রস্তুত ছিল না কেউ। সুস্থ স্বামীকে রেখে বৌদি গিয়েছিলেন কক্সবাজার। এসেছেন যখন, ততক্ষণে সিঁদুর মুছে যাওয়ার ট্রাজেডির মুখোমুখি তিনি।
হৃদরোগ কেড়ে নিল দাদাকে। হায় সেই কতদিন থেকে চেনাজানা, তবু আপনি থেকে সম্বোধন তুমিতে নামাতে পারিনি। চাকরির বিড়ম্বনা, নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় কোমর ভেঙে, মাথা ফেটে রক্তাক্ত দাদাকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনার তোড়জোড়, বঙ্গবন্ধু হাসপাতালের কেবিন, হাতে ওয়াকিং স্টিক নিয়ে সচিবের দায়িত্বপালন, স্বজনের অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে আশীর্বাদ জ্ঞাপন। সবই স্মৃতি এখন। দাদা এ বড় অসময়ে প্রস্থান আপনার। সাংবাদিক সন্তোষ মন্ডল, একাত্তরের আলোকচিত্রি সাংবাদিক রিপন এবং রণজিৎ দাদা পরপর তিনটি মৃত্যু বুক ভারী করে দিল একের পর এক।
লেখক : সম্পাদক, ডিবিসি নিউজ