এল আর বাদল : টাইগার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড কর্তারা প্রায়ই একটি মন্তব্য করেন, সেটা হলো ‘ ছুটি পাগল হাথুরু’। কর্তারা মন্তব্য করলেও কোচকে ছুটি দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম গ্রাহ্য করেন না। কোচের সঙ্গে ছুটির যে চুক্তি, তা উপেক্ষা করেই ছুটি দেওয়া হয়। যে কারণে সুযোগ পেলেই হাথুরু সিংহে ছুটি নিয়ে চলে যান অস্ট্রেলিয়াতে পরিবারের কাছে।
ছুটি দেয়ার ক্ষেত্রে বিসিবি এতোটাই উদার যে, সুযোগ বুঝে ছুটি উপভোগ করে যাচ্ছেন জাতীয় দলের শ্রীলঙ্কান এই কোচ। কোচের অতিরিক্ত ছুটি কাটানো নিয়ে চারদিকে সমালোচনা হলেও নীরব বিসিবি। ক্রিকেট বিশ্বের কোনো কোচকে এভাবে ছুটি দেয়া হয় না। ক্রিকেট বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিসিবি এগিয়ে গেলেও কোচের ছুটি দেয়ার নিয়মকানুন মেনে চলার ক্ষেত্রে পিছিয়ে তারা। বিশ্বকাপের পর দুই মাস ছুটি কাটিয়ে কোচ ঢাকায় ফিরেন গত ১ জুন। দুই সপ্তাহের কিছু বেশি এখানে অবস্থান করে গত ১৯ জুন আবার অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারের কাছে ফিরে যান। এবারও প্রায় এক মাসের ছুটি পেলেন। ঢাকায় ফিরবেন জুলাই মাসের তৃতীয় সপ্তায়।
চলতি মাসে কোচ ঢাকায় ফিরে মাত্র ১৮ দিন থাকলেন। এই সময়ে তিনি কি কাজ করলেন? ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের কয়েকটা ম্যাচ দেখেছেন বটে। আর বিসিবির আবিষ্কার দ্বিস্তরের নির্বাচক কমিটি করার পিছনে অবদান রেখেছেন।
আবার ছুটিতে যাওয়া নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন যা বললেন, এই সময়ে কোচের হাতে কাজ নেই। জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা সবাই ছুটিতে। ২০ জুলাই থেকে ক্যাম্প শুরু হবে। ঢাকায় থেকে এ সময়ে কীইবা করার আছে কোচের। সুজন বলেন, ২০ জুলাইয়ের আগেই ঢাকায় ফিরবেন অস্ট্রেলিয়াতে বসবাস করা হাতুরাসিংহে।
২০১৪ সালে দুই বছরের জন্য বিসিবির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন তিনি। চুক্তি অনুসারে তিনি বছরে ৬০ দিন ছুটি কাটাতে পারবেন। দুই বছরে কাটাবেন ১২০ দিন। কিন্তু চুক্তির তোয়াক্কা না করে বিসিবি দুই বছরে ২২০ দিন ছুটি কাটানোর সুযোগ দিয়েছেন কোচকে।
কোচ যে বাড়তি ছুটি কাটিয়েছেন, এটা কী বৈতনিক না অবৈতনিক? সাধারণ নিয়ম বলছে, অসুস্থতাজনিত কারণ ছাড়া বছরে প্রাপ্য ছুটির বেশি কাটালে সেটা হবে অবৈতনিক। কিন্তু বিসিবির সঙ্গে কোচের এ নিয়ে কী ধরনের চুক্তি হয়েছিল? উত্তরটা বিসিবির প্রধান নির্বাহী পাশ কাটিয়ে গিয়ে বললেন, আসলে কাজের সঙ্গে সমন্বয় করে বাড়তি ছুটি দেওয়ারও সংস্থান রয়েছে। বিসিবির সঙ্গে নতুন করে ৩ বছরের চুক্তি স্বাক্ষর হবে হাতুরার ঢাকায় ফিরে আসার পরই। নতুন চুক্তিতে ছুটির বিষয়টি ঢেলে সাজানো হবে বলে জানালেন নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন।