মিশন বাস্তবায়নে এসপি বাবুলের দুই সোর্স
মিতু হত্যাকা
ইসমাঈল হুসাইন ইমু ও শহীদুল ইসলাম (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু আক্তার হত্যার মিশন বাস্তবায়নে ছিল এসপি বাবুল আক্তারের দুই সোর্স। এরা হলেন, আবু মুছা ও এহতেশামুল হক ভোলা।
এছাড়া এই হত্যাকা-ে অংশ নেন আরও কয়েকজন ভাড়াটে খুনি। তবে পুরো মিশনের দায়িত্বে ছিলেন সোর্স আবু মুছা বলে জানিয়েছন চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র।
এদিকে মিতু হত্যাকারীদের গ্রেফতার নিয়ে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ খোলেনি পুলিশ। এ প্রসঙ্গে সিএমপি কমিশনার ইকবাল বাহার বলেন, দুই এক দিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে পুরো বিষয়টি সবাইকে জানাতে পারব।
সূত্রমতে, শুক্রবার গভীর রাতে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় শ্বশুরের বাসা থেকে বাবুল আক্তারকে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর গতকাল শনিবার বাবুল আক্তারকে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে মিতু হত্যাকা-ের ঘটনায় কঠোর নিরাপত্তায় জিজ্ঞাসাবাদের পর বিকেলে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
তবে এসপি বাবুল আক্তার সাংবাদিকদের জানান, তার স্ত্রী হত্যা মামলার তদন্তের বিষয়ে আলোচনা করতেই তাকে ডেকে নেয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, আমাকে গ্রেফতার করা হয়নি। যারা তদন্ত করছেন, তারা বিভিন্ন বিষয়ে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তবে তাকে কোথায় ডেকে নেয়া হয়েছিল সে বিষয়ে কিছুই জানাননি পুলিশের এ কর্মকর্তা।
জানা যায়, মিতু হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অন্যতম হলো ভোলা ও মুছা। এই দুজনের মধ্যে মুছা ছিলেন বাবুল আক্তারের বিশ্বস্ত নতুন সোর্স। এর আগে সোর্স হিসেবে কাজ করতো এহতেশামুল হক ভোলা। ভোলা এই কাজ থেকে সরে গিয়ে মুছাকে বাবুল আক্তারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সেই থেকে বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে নিয়মিত কাজ করছেন মুছা। তবে বাবুল আক্তারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল ভোলার। সে একবার অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছিল। নতুন ব্রীজ, চাক্তাই এলাকার সন্ত্রাসী ছিলেন এহতেশামুল হক ভোলা। তার একটি বাহিনী রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানাসহ বিভিন্ন থানায় রয়েছে একাধিক মামলা।
সূত্র জানায়, আবু মুছা দুর্ধ্বর্ষ একজন সন্ত্রাসী। অনেক সময় ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করেন। তার বাড়ি রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট এলাকায়। চট্টগ্রাম নগরীতে এসপি বাবুল আক্তারের হাতেই গ্রেফতার হয়েছিলেন তিনি। এরপর কারাগারে ভোলার সঙ্গে পরিচয় হয় মুছার। কারাগার থেকে বের হয়ে দুজনই বাবুল আক্তারের সোর্স হিসেবে কাজ করেন। বছর দুয়েক হলো বিশ্বস্ত সোর্স হিসেবে মুছা বাবুল আক্তারের সঙ্গে কাজ করছেন। বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যাকা-ের মিশন বাস্তবায়নের দায়িত্বে ছিলেন মুছা। আর ভাড়াটে খুনি ও অস্ত্রের যোগান এহতেশামুল হক ভোলা দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে ভোলা ও মুছা এই তথ্য দিয়েছে বলে গোয়েন্দা পুলিশের সূত্রে জানা গেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলার বিভিন্নস্থান থেকে মিতু হত্যাকা-ে অংশ নেওয়া চারজনকে আটক করে পুলিশ। আটকের পর চারজনের আলাদা আলাদা করে জবানবন্দিও নেওয়া হয়। ওই জবানবন্দিতে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেন।
বাবুল আক্তারের স্ত্রী হত্যার ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে গোয়েন্দা পুলিশ, র্যাব, সিআইডি, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট (সিটিআই)। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম