চরিত্র হননের সাংবাদিকতা!
তুষার আবদুল্লাহ
বাবুল আক্তার নিয়ে সাধারণ মানুষ সংশয়ে পড়ে গেছেন। তার স্ত্রী মিতুকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করার পর, সাধারণের সামনে বাবুল আক্তারের বীরত্বপূর্ণ কাহিনী প্রকাশিত হতে থাকে। তার সততা, পেশার প্রতি নিষ্ঠা প্রায় কিংবদন্তিতে পৌঁছে গেছে। এই উচ্চতায় বাবুল আক্তারকে পৌঁছে দিয়েছিল গণমাধ্যম। আবার এই গণমাধ্যমই বাবুল আক্তারকে কিংবদন্তিতুল্য নায়ক থেকে ভিলেনে নামিয়ে আনে। গণমাধ্যম অজ্ঞাতসূত্রের বরাত দিয়ে বাবুল আক্তারকে স্ত্রী হত্যাকারী বলে উপস্থাপন করে।
গোয়েন্দা পুলিশ বাবুল আক্তারকে তার স্ত্রীর হত্যার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই পারে। সেই প্রক্রিয়াটির বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে আকাশকুসুম গুজব ছড়ানোর কাজটি করেছে গণমাধ্যম। একথাও সত্য যে বাবুল আক্তারকে গোয়েন্দা দফতরে ডেকে আনা ও তাকে দীর্ঘক্ষণ আটকে রাখা, গুজব তৈরিতে উস্কানি জুগিয়েছে।
ফলাফল হলো বাবুল আক্তারকে সাধারণের নজরবন্দী করে ফেলা। সেই নজর সন্দেহ মিশ্রিত। বাবুল আক্তার নিয়ে খুব বেশি আলোচনার সুযোগ নেই এজন্য যে, সাধারণ মানুষ আরও বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ে যাবেন। গুজবের পাখা আরও উড়তে শুরু করবে।
মিতু হত্যার তদন্ত কাজ যদি সন্দেহমুক্তভাবে এগিয়ে যায়। সেখানে কোনো প্রভাবের আঁচড় না পড়ে, তবে অবশ্যই জানা যাবে ওই হত্যাকা-ের নীলনকশা কার বা জড়িত ছিল কারা।
তবে গণমাধ্যম যে সংযমী হতে পারছে না, আলোচনায় আসা প্রয়োজন এই দিকটি। খবরের বাজারে পাঠক, দর্শক ধরতে হুড়মুড় করে যেকোনো গুজবকে বা প্রাথমিক তথ্যকে প্রকাশ করার ধৈর্য হারিয়ে বসেছে আমাদের গণমাধ্যম।
এক্ষেত্রে অনলাইনগুলো এগিয়ে থাকলেও ধৈর্যচ্যুতি থেকে পিছিয়ে নেই টেলিভিশনগুলোও। তথাকথিত ব্রেকিং নিউজ যে তাদের প্রতি দর্শকদের বিশ্বাসে ভাঙন ধরাচ্ছে এদিকটি উপলব্ধি করার সময় এখন।
লেখক : হেড অব নিউজ, সময় টেলিভিশন
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন