ঠাকুরগাঁওয়ে অতিবর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
সাইফুল ইসলাম প্রবাল চৌধুরি, ঠাকুরগাঁও : অতিবর্ষণে ঠাকুরগাঁওয়ে নিম্নাঞ্চল পাবিত হয়েছে। এতে দুই শতাদিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন তারা। গত দুই দিনের প্রবল বর্ষণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে বাড়ি ঘরে পানি ওঠায় ২০টি পরিবার শহরের বিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দা ও ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন। এদিকে পানিবন্দিরা এখনও পায়নি কোন সরকারি সাহায্য সহযোগিতা। তাছাড়া প্রবল বর্ষণে বেড়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে দশ নদীর পানিও।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত দিন ও রাতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় ঠাকুরগাঁওয়ে। থেমে থেমে চলে এর বৃষ্টিপাত। দিনে অল্প হলেও রাতে টানা কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিপাত হয়েছে গত দুইদিন। এতে করে অতিবর্ষণে ঠাকুরগাঁওয়ে নিম্নাঞ্চল পাবিত হয়েছে। এর ফলে ঠাকুরগাঁও শহরের ডিসি বস্তি, খালপাড়া, হঠাৎপাড়া ও মুন্সিপাড়া এবং টাঙ্গনও সেনুয়া নদী সংলগ্ন দুই শতাধিক পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। অনেক বাড়িতে পানি উঠেছে। এতে এসব পরিবারের কয়েকশ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। তারা বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন। আবার বাড়িতে অনেক বেশি পানি উঠায় অনেকে বাড়ি ঘরে পানি ওঠায় বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। তাছাড়া ২০টি পরিবার শহরের বিভার ভিউ উচ্চ বিদ্যালয়ের বারান্দা ও ঘরে আশ্রয় নিয়েছেন।
শহরের ডিসি বস্তির আমিনা বেগম জানান, গত দুই দিনের বৃষ্টিতে আমাদের শতাধিক পরিবারের বাড়িতে পানি ঢুকেছে। যাদেও বাড়িতে কম পানি ঢুকেছে তারা বাড়িতেই আছে কষ্ট করে আর যাদের বাড়িতে ও ঘরের ভেতওে পানি উঠেছে তারা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে। আমাদের বাসায় ও ঘরে পানি ওঠায় আমরা স্কুলের আশ্রয় কেন্দ্রে অনেক কষ্ট করে আছি জরুরি মালপত্র ও পরিবার পরিজন নিয়ে। শুধু আমরা না আমাদের মতো ২০-২৫টি পরিবার এখানে গত দুই দিন ধরে থাকছে স্কুলের ঘর ও বারান্দায়।
একই এলাকার মর্জিনা বেগম ও মলি আক্তার জানান, এমনিতেই বৃষ্টিতে বের হওয়া যায় না। তার উপরে পানিবন্দি হয়ে আছি। রমজানে পরিবার পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে আছি। সরকারি কোন প্রকার সাহায্য সহযোগিতাও পাচ্ছি না। শহরের খালপাড়া এলাকার মাহবুব আলম ও মনসুর আলী জানান, প্রবল বর্ষণে বাড়িতে ও ঘরের ভেতরে পানি ঢুকেছে। ড্রেনেজ ও নিষ্কাষণ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় পানি দ্রুত চলে যাচ্ছে না।
এতে করে শতাধিক পরিবারের মানুষ এ এলাকায় পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী জানান, গত দুই দিনে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। এই দুই দিনে প্রায় সাড়ে শতাধিক মি.লি মিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। অতিবর্ষণে এ জেলা শহরের নিম্নাঞ্চল পাবিত হয়েছে। এতে করে নিম্নাঞ্চলের মানুষরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তাছাড়া প্রবল বর্ষণে জেলার দশ নদ নদীর পানিও বেড়েছে কয়েক সেন্টিমিটার। তবে এ পানি অধিক সময় স্থায়ী হবে না আরো বৃষ্টিপাত না হলে বলেও জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মূকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, দুই দিনের বৃষ্টিপাতে নিচু এলাকার মানুষরা দুর্ভোগে পড়েছেন। নিচু এলাকা হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই এরা সমস্যায় পড়ে। এসব এলাকায় খোজ খবর নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা হবে বলেও জানান তিনি।