আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তখন বয়স মাত্র ২০ বছর। সেই থেকে তার উপর যৌন হয়রানি শুরু হয়। তিনি যে পোশাক কারখানায় কাজ করতেন, সেখানকার পুরুষ তত্ত্বাবধায়ক তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করত। অভিযোগ করেও কোনো ফল পাননি এই পোশাককর্মী। আর তার নিপীড়ক থেকেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। যৌন হয়রানির এমন ঘটনা আরও অনেক পোশাককর্মীর ক্ষেত্রে হয়েছে। বাংলাদেশ প্রতিদিন
শনিবার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ ভারতের শহর বেঙ্গালুরুর পোশাক কারখানায় কর্মরত প্রতি সাতজন নারী কর্মীর মধ্যে একজন কর্মক্ষেত্রে ধর্ষণের শিকার হন কিংবা যৌনকাজে বাধ্য হন। প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক নারী অধিকার সংগঠন সিস্টারস ফর চেঞ্জ এবং বেঙ্গালুরুভিত্তিক মুন্নাদে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বেঙ্গালুরুর প্রায় ১ হাজার ২০০ পোশাক কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা নিয়মিত সহিংসতা, ভীতি, কু-নজর, মারধর, শ্বাসরোধ, পুড়িয়ে দেওয়া, পর্নোগ্রাফি দেখতে বাধ্য করার মতো নিপীড়নের মুখোমুখি হন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ নারী পোশাককর্মী তাদের বৈরী কর্মক্ষেত্রে ভয়ভীতি ও সহিংসতার শিকার হন।
সিস্টারস ফর চেঞ্জের নির্বাহী পরিচালক অ্যালিসন গর্ডন বলেন, জরিপের সময় যৌন সহিংসতার যে তথ্য পাওয়া যায়, তাতে তারা খুবই মর্মাহত। কারখানার এমন পরিবেশ এবং অপরাধীদের আইনের ভীতি না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।
নারী কর্মীদের উপর জরিপের ভিত্তিতে করা ওই প্রতিবেদন এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে নিপীড়নের বিষয়ে তারা (নারী কর্মী) খুব কমই কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন। জরিপে অংশ নেওয়া উত্তরদাতাদের মধ্যে ৮২ শতাংশ জানিয়েছেন, পুলিশ বা প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপর আস্থা না থাকায় তারা অভিযোগ জানাননি।
সিস্টারস ফর চেঞ্জের অ্যালিসন গর্ডন বলেন, আইন আছে, কিন্তু সেখানে আইনের ব্যাপারে সচেতনতা এবং তার বাস্তবায়ন উপেক্ষিত। প্রতিবেদনে সরকারের প্রতি আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে যৌন হয়রানির বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে কারখানা পরিদর্শনের হার বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে।
অ্যালিসন গর্ডন বলেন, তাদের প্রতিবেদনে নিপীড়নের ব্যপ্তির সুস্পষ্ট প্রমাণ উঠে এসেছে। এখন পরিবর্তনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।
তামিলনাড়ুর ইরোদ এলাকায় পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা রিডের এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতিবেদনটি শুধু বেঙ্গালুরুর জন্য সত্য নয়, পুরো ভারতের ক্ষেত্রেও সত্য। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা