লিহান লিমা : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে গণভোটের রায়ে নাখোশ দেশটির সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশ। তারা চায়, আবার গণভোটের আয়োজন করা হোক। এ দাবিতে তারা প্রচারেও নেমেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৩২ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ পুনরায় গণভোট দাবির পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে।
গণভোটের রায়ে সামগ্রিকভাবে যুক্তরাজ্যের ইইউ ছাড়ার পক্ষে বেশি ভোট পড়লেও দেশটির লন্ডন, স্কটল্যান্ড এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড এলাকায় ইইউর সদস্যপদ বহাল রাখার পক্ষেই বেশি মানুষ ভোট দিয়েছেন। আর ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের ভোটাররা।
অঞ্চলভেদে ভোটারদের মতপার্থক্যের বিষয়টি আলোচনায় এনে আবার গণভোট আয়োজনের দাবিতে যুক্তরাজ্যে গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে। লন্ডন ও দেশের অন্যান্য অংশে বিক্ষোভও করছে কিছু মানুষ। ইতোমধ্যে ৩২ লাখ ৩৪ হাজারেরও বেশি লোক নতুন করে গণভোটের দাবির পক্ষে স্বাক্ষর করেছেন। সাধারণত কোনো আবেদনে এক লাখ মানুষ স্বাক্ষর করলেই তা নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়।
এছাড়া বহু লোকের স্বাক্ষর-সংবলিত একটি দাবি পাঠানো হয়েছে লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের কাছে। এতে দাবি জানানো হয়েছে, তিনি যেন লন্ডনকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করে ইইউর সঙ্গে যুক্ত থাকার পদক্ষেপ নেন। কেননা লন্ডনের ৬২ শতাংশ মানুষ ইইউতে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
এদিকে ব্রেক্সিট গণভোটকে পাগলামো বলে আখ্যায়িত করেছেন লেবার দলের এমপি ডেভিড ল্যামি। এ গণভোটের রায়কে বন্ধ করতে তিনি হাউস অব কমন্সের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। টটেনহ্যাম থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ল্যামি। তিনি লেবার দলের একজন সিনিয়র এমপি ও সাবেক মন্ত্রী। পার্লামেন্টের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এই পাগলামো বন্ধ করুন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া প্রশ্নে গণভোটের রায়কে বানচাল করে দিন।। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সের কাছে গণভোটের রায়কে দুঃস্বপ্ন বলে আখ্যায়িত করেছেন।
আরেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ প্রফেসর জন কার্টেস ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড কে বলেন, কত মানুষ ব্রেক্সিট এর পক্ষে রায় দিয়েছে? সতের কোটি। যার সাথে দশ লাখ মানুষের তুলনা করা চলে না। এমন আবেদনে স্বাক্ষর করা কোনো ভালো কাজ নয়, কারণ তাদের এটি রায় হওয়ার আগেই করার কথা ছিল। এই পিটিশন একটি মহান চুক্তিকে অবজ্ঞা করেছে।
তবে এই আবেদনটি বিবেচনা করে দেখবে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট। কারণ কোনো পিটিশনে এক লাখের বেশি স্বাক্ষর থাকলে পার্লামেন্টে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। গত বৃহস্পতিবারের গণভোটে ৫২ শতাংশ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে যাওয়ার পক্ষে আর ৪৮ শতাংশ মানুষ থাকার পক্ষে রায় দেয়।
গত শনিবার ইইউর প্রতিষ্ঠাকালীন ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি বৈঠকে ব্রিটেনকে ইইউ ছাড়ার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। গত বুধবার ইইউর বাকি ২৭টি দেশের নেতারা পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য জরুরি বৈঠকে বসবেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম