৩৪তম বিসিএসের নন ক্যাডার থেকে মাধ্যমিকে শিক্ষক নিয়োগ হবে
দেলওয়ার হোসাইন : দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক সংকট দূর করতে ৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কিন্তু ক্যাডার পদ পাননি (নন ক্যাডার) এমন প্রার্থীদের মধ্য থেকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষকের যত শূন্যপদ আছে, তার ৫০ শতাংশ এই প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দেওয়া হবে।
বর্তমানে ১ হাজার ৭৪৪টি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। গতকাল রোববার সরকারি কর্মকমিশনে (পিএসসিতে) অনুষ্ঠিত এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় উপস্থিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসন্ন ঈদের আগেই এই নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
তবে সরকারি কর্মকমিশনের সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ এ প্রতিবেদককে বলেন, এ নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ও কোনো চাহিদা দেয়নি। পিএসসি সামষ্টিক কোনো সিদ্ধান্ত নিয়েছে কি না সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা বলছেন, চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকা নিয়োগবিধির আলোকে যোগ্যতা ধরে নিয়োগ দেওয়া উচিত হবে। না হয় নতুন সমস্যার আশঙ্কা রয়েছে। তারা চায় দ্রুত নিয়োগবিধি করা হোক। শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) একাধিক কর্মকর্তা বলেন, নিয়োগবিধি সংশোধনের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে এখন সচিব কমিটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বিবেচনাধীন।
মাউশির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ৩৪তম বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হলে মাধ্যমিকের ১৯৯১ সালের নিয়োগবিধি ও প্রস্তাবিত নিয়োগবিধিতে যে যোগ্যতা আছে, তার চেয়ে বেশি যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশের ৩৩৩টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৭৪৪টি সহকারী শিক্ষকের পদ ফাঁকা। সহকারী শিক্ষককের অনুমোদিত পদ আছে ১০ হাজার ৬টি। সবচেয়ে বেশি সমস্যা ইংরেজি, গণিত ও বাংলা বিষয়ে। কিন্তু পদ উন্নীতকরণের জটিলতায় সহকারী শিক্ষক পদে ২০১২ সালের জানুয়ারির পর আর নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কারণ, ওই বছরের ১৫ মে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষককের পদ তৃতীয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড পদমর্যাদায় উন্নীত করা হয়। এর ফলে নতুন করে শিক্ষক নিয়োগের জন্য নিয়োগবিধি সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কারণ, দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হয় পিএসসির মাধ্যমে। কিন্তু গত চার বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও নিয়োগবিধি চূড়ান্ত করতে পারেনি সরকার। তাই নিয়োগও আটকে আছে। এ কারণে সংকটও বাড়ছে।
এ রকম পরিস্থিতিতে মাউশি শিক্ষক সংকট দূর করতে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে যারা ক্যাডার পদে সুপারিশ প্রাপ্ত নন, কেবল তাদের সহকারী শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে প্রস্তাব পাঠায়। এখন বিষয়টি চূড়ান্ত হলো।