মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঈদ ভাতা চান মন্ত্রী
মাহমুদুল আলম : মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ঈদসহ বিভিন্ন উৎসব ভাতার জন্য বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। চলমান সংসদ অধিবেশনে এ বিষয়ে গতকাল রোববার তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ না করলে আজ দেশ স্বাধীন হতো না। আমরা কেউ আজকের এ অবস্থানে থাকতে পারতাম না।
তিনি বলেন, সেই মুক্তিযোদ্ধাদের মনের একটা আকুতি- সামনে কয়েকদিন পরে ঈদ। সকলে ঈদ বোনাস পাবে। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধারা পাচ্ছেন না। বৈশাখী ভাতাও দেওয়া হচ্ছে না। এর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের আরেকটি বড় দাবি- ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস এই দুইদিন তাদের জন্য বিশেষ ভাতা চালু করতে হবে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা হিসাব করে দেখেছি, ৪ হাজার টাকা করে ঈদ বোনাস ও ২ হাজার টাকা বৈশাখী ভাতা এবং স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ৫ হাজার টাকা করে ভাতা দিলে বছরে মাত্র ৪০০ কোটি টাকার প্রয়োজন হয়। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে এই অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ করব।
মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা পয়সায় চিকিৎসার উদ্যোগের কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা এ বছর সব মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা পয়সায় দেশের অভ্যন্তরে সব ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। তবে বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
বক্তব্যে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী দল জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধের বিল ‘দ্রুত’ জাতীয় সংসদে তোলার দাবিও জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলাম যুদ্ধাপরাধী দল। কারণ তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। তাদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাদের নিষিদ্ধ করা ছাড়া গত্যন্তর নেই।
তিনি আরও বলেন, তাদের নিষিদ্ধের বিষয়ে আমাদের একটি প্রচেষ্টা ছিল। আইনমন্ত্রীও আশ্বাস দিয়েছিলেন- এই সেশনেই জামায়াত নিষিদ্ধ করার জন্য আইন আসবে। আমি আশা করি, দ্রুতই সেই আইন সংসদে উত্থাপিত হবে।
পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ভূমিকা অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, পাঠ্যসূচিতে আমরা মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথার ইতিহাস অন্তর্ভুক্ত করেছি। কিন্তু ওই পাক-হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর যুদ্ধাপরাধীদের কথা পাঠ্যপুস্তকে নেই। এটা হতে পারে না। ওই কাপুরুষ যুদ্ধাপরাধীদের ১৯৭১ সালের ভূমিকা পরবর্তী প্রজন্ম সঠিকভাবে জানতে না পারলে তারা ভালো-মন্দ কীভাবে বিচার করবে?
আ ক ম মোজাম্মেল অভিযোগ করেন, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন হয় না। তিনি বলেন, ‘অনেক জায়গায় মাঠ নেই অজুহাত দেখিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া হয় না। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। চাইলে শ্রেণি কক্ষেও জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া যায়। অনেকের গাত্রদাহের কারণ জাতীয় সঙ্গীত। এখানে তাদের পাক সার জমিন নেই। এটা না থাকলে তাদের মন ভরে না।
মন্ত্রী বলেন, অনলাইনে অল্প দিনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের এমন আইডি কার্ড দেব যাতে ৮ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। টাকা জাল করা যাবে, কিন্তু এই কার্ড জাল করা যাবে না। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম