নারী ও পুরুষের পার্থক্য
জুলফিয়া ইসলাম
কথিত আছে, ছেলেরা দেখে বিশ্বাস করে আর মেয়েরা বিশ্বাস করে শুনে। এ কারণেই ছেলেরা জেনেছে কিভাবে নারীদের সঙ্গে লেনদেন করতে হবে। কিংবা কিভাবে সম্পর্কের গতিপথ নির্ধারণ করতে হবে। ছেলেরা তাই উপস্থাপন করে যা নারীরা শুনতে আগ্রহী। নারীরা যা বিশ্বাসযোগ্য মনে করবে পুরুষরা তাই করবে।
মানুষ মাত্রই সৌন্দর্যের পূজারী। এজন্য নারী সুন্দর হতে চায়। নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করতে চায়। সুন্দর দেহের কাঠামো, চুল, ত্বকের রঙ সবই পুরুষকে আকর্ষণ করে। আর তাই নারীও পুরুষের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য উৎসাহবোধ করে। এজন্যই নারী পুরুষের জীবনের দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য সেটির কিছু অংশ মৌলিক। বাকিটা পরিবেশগত।
পুরুষের মনোযোগের কেন্দ্রবন্দিু হলো বস্তু। পুরুষের সমস্যা সমাধানের জন্য এটি প্রয়োজন। এটিই পুরুষতন্ত্র। এর মাধ্যমে পুরুষ নিজেকে রক্ষা করে। পুরুষের এই বস্তুবাদী মন মানসিকতা কার্যকর থাকে দৃশ্যমান জগতকে ঘিরে। দেখাই হলো পুরুষের বস্তুতান্ত্রিক মনের ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য পরিসর। অন্যদিকে নারীরা বস্তু ও ভাববাদী জগতের মধ্য থেকে কিছুটা পেতে চায় কিংবা গ্রহণের জন্য প্রস্তুত থাকে। তারা প্রাপ্তির হিসাবকারী। একজন নারী যে শুনে বিশ্বাস করে তার প্রমাণ হলো, সে একইসঙ্গে অনেকগুলো কাজ করতে পারে। ঘরে কম্পিউটারে কাজ, টেলিফোনে কথা বলা এবং রান্না করা, অনেকগুলো কাজ তার দ্বারা হয়ে থাকে। এ থেকে বোঝা যায়, নারীরা কিছুটা হলেও শ্রোতা।
পুরুষ যখনই অবচেতনে শোনে তার সঙ্গীনি কিছু বলছে তখন তার মধ্যে বন্যপ্রাণীর মতো সতর্কতাবোধ জেগে ওঠে। আর যখনই তার সঙ্গীনি কিছু বলে তখনই তার ওই মুহূর্তে মনে হয় সঙ্গীনিকে বাধা দেওয়াটাই প্রয়োজনীয়। এই প্রতিক্রিয়া সচেতন মনকে গ্রাস করবে। আর তারই ফলশ্রুতিতে সে পরবর্তীতে যোগাযোগ করবে এটা খুবই অবাস্তব।
নারীরা তখন যে বিষয়ে আশা করতে পারে তা হলো এই যে সর্বোত্তম পর্যায় পুরুষটি তাকে জিজ্ঞাসা করবে যে, সে কিছু বলেছে কী না? কিংবা সৌভাগ্যবশত এমনও হতে পারে যে, হয়তো তার বলা কথাগুলো তার পুরুষ সঙ্গীর মুখে পুনরায় শুনবে। তবে তার পুরুষসঙ্গী কতটুকু তার কথায় মনোযোগী ছিল তার ওপর নির্ভর করবে। তার মনোসংযোগের বিষয়টি কী কারণে যৌক্তিক ছিল। যার কারণে সঙ্গীনি কী বলল তা জিজ্ঞেস করে সঙ্গে সঙ্গেই মনোজগতে প্রত্যাবর্তন করবে।
লেখক : কথাসাহিত্যিক ও মনোবিশ্লেষক
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন