মেসিদের কাঁদিয়ে আবার কোপা জিতল চিলি
এল আর বাদল : এবারও পারল না আর্জেন্টিনা। ২০১২ সালের ভেজা চোখ তাদের ভেজাই থাকল। শিরোপা জয়ী চিলি চার বছর আগের উচ্ছ্বাস ধরে রাখল এবারও। দুর্দান্ত পারফরমেন্স দেখিয়ে শিরোপা তো নিলই, আর্জেন্টাইনদের কাঁদিয়ে স্টেডিয়ামের পরিবেশ ভারী করে ছাড়ল। আগের বার (২০১২) এই চিলির কাছেই হেরেছিল লিওনেল মেসিরা। এবারও তাই। কোপার শতবর্ষী এই আসর চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। ২৩ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৯৩ সালে কোপা জয়ের স্বাদ পায় আর্জেন্টাইনরা। এরপর আর কোনো আন্তর্জাতিক আসর জিততে পারেনি মেসিরা। সে কারণেই এবার কোপা আমেরিকাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিল অধিনায়ক মেসি। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। চিলির কাছে আবারও শিরোপা হারাতে হলো। চিলি আর্জেন্টিনাকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়ে শিরোপা অক্ষুণœ রাখে। আর্জেন্টিনার স্বপ্নপূরণ না হওয়ায় ফুটবল বিশ্বের লক্ষ-কোটি মেসিভক্ত মুষড়ে পড়েন।
খেলার নির্ধারিত সময়ের পর অতিরিক্ত ৩০ মিনিটেও গোলের দেখা পায়নি দুই দল। ফলে ভাগ্য নির্ধারণ করতে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। আর তাতে ৪-২ গোলের ব্যবধানে জয় তুলে নেয় চিলিয়ানরা। নির্ধারিত সময়ে ফাউল-পাল্টা ফাউল, রেফারির হলুদ ও লালকার্ড প্রদর্শন ছিল খেলার প্রধান চালচিত্র। তবে অতিরিক্ত সময়ের খেলায় দুই দলই সাবধানী ফুটবল খেলে গোল করার প্রাণান্তর চেষ্টা করেছে। গোলের সুযোগও পায় দুদল, কিন্তু গোল রক্ষকের অনমনীয় দৃঢ়তায় সাফল্য আসেনি। খেলার প্রথমার্ধে দুই দলের একজন করে খেলোয়াড় লাল কার্ড পাওয়ায় দশ জনের দলে পরিণত হয় গতবারের দুই ফাইনালিস্ট। সূত্র, ইয়াহু স্পোর্টস
গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত কোপা আমেরিকা ফুটবলের ফাইনালে ফিফা র্যাংকিংয়ের সেরা দল আর্জেন্টিনাকে নাকানিচুবানি খাইয়েছে চিলি। দলের প্রাণভোমড়া মেসিকে চিলিয়ান সেনারা কড়া পাহাড়ায় রাখায় সতীর্থরাও যেন খেই হারিয়ে ফেলে। মাশ্চেরানো, অ্যাগুয়েরো ও ডি মারিয়া আর্জেন্টিানার প্রাণ শক্তি হলেও তাদের শটগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে বার বার। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেও ব্যর্থতা। পেনাল্টি শটে চিলির ভিদালের নেওয়া প্রথম শটটি রুখে দেন আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক রোমেরো। এগিয়ে যেতে প্রথম শট নিতে আসেন আর্জেন্টিনার দলপতি মেসি। তবে, তার নেওয়া দ্রুতগতির শটটি গোলবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। দ্বিতীয় শটে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করেন মাশ্চেরানো আর চিলির হয়ে গোল করেন ক্যাসিও। তৃতীয় শটে আরানগুয়েজ গোলের দেখা পান। আর্জেন্টিনাকে সঠিক পথেই রাখেন আগুয়েরো। নিজেদের চতুর্থ শটে চিলির হয়ে গোল করেন এমানুয়েল। আর নিজেদের চতুর্থ শট থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন লুকাস বিগলিয়া। তার শটটি রুখে দেন চিলির গোলরক্ষক ব্রাভো। ফলে, এগিয়ে থেকে পঞ্চম শটটি নেন চিলির আন্দ্রেস সিলভা। আর সেই শটে গোল করে দলকে টানা দ্বিতীয়বার কোপার চ্যাম্পিয়ন করেন।
এর আগে ম্যাচের ১৬ ও ২৮ মিনিটে দুবার হলুদ কার্ড দেখায় মাঠের বাইরে যেতে হয় চিলির মার্সেলো ডিয়াজকে। আর ম্যাচের ৪৩ মিনিটের মাথায় আর্জেন্টিনার মার্কোস রোহোকে লাল কার্ড দেখে মাঠের বাইরে চলে যেতে হয়। দীর্ঘ ২৩ বছরের শিরোপা খরা কাটাতে চাওয়া আর্জেন্টিনা ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনাল, কোপা আমেরিকার গতবারের ফাইনালের মতো এবারের ফাইনালের প্রথমার্ধে কোনো গোল আদায় করতে পারেনি। ম্যাচের ২৩ মিনিটের মাথায় গুয়েনের দারুণ একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি