রাহুল ছুটিতে কংগ্রেসের হাল ধরেছেন প্রিয়াঙ্কা
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাহুল গান্ধী ছুটিতে। তাই ভাইয়ের অনুপস্থিতে মায়ের সঙ্গে ভোটের কৌশল ঠিক করছেন বোন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। গত ২০ জুন জন্মদিনের পরের সকালে টুইট করে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাহুল গান্ধী জানিয়েছিলেন, তিনি ফের বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। তবে এবারের অবকাশ ‘ছোট’। কিন্তু এক সপ্তাহ কেটে গেলেও অজ্ঞাতবাস থেকে রাহুল ফিরেছেন কি না, তার কোনো খবর নেই। বিজেপির সুব্রহ্মণ্যম স্বামী অবশ্য দাবি করেছেন, এক ‘বিশেষ বন্ধু’র সঙ্গে রাহুল এখন লন্ডনে। এ অবস্থায় দেশটির উত্তর প্রদেশের ভোট কৌশল ঠিক করতে দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। তাতে প্রিয়াঙ্কাকেও সামিল করছেন তিনি। আনন্দবাজার
কংগ্রেস সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে উত্তর প্রদেশের দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা গুলাম নবি আজাদ বেশ কয়েকটি বৈঠক করেছেন দশ জনপথে। সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও। প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে আলাদাভাবেও আলোচনা হয়েছে আজাদের। আসন্ন ভোটে দলের রণকৌশল কী হবে, তা নিয়ে উত্তর প্রদেশের আরও দুই নেতা পিএল পুনিয়া ও প্রমোদ তিওয়ারির সঙ্গেও প্রিয়াঙ্কার কথা হয়েছে। কংগ্রেস সূত্রের মতে, উত্তর প্রদেশের আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রিয়াঙ্কা গোটা রাজ্যেই প্রচার করবেন। এতদিন ভাই ও মায়ের নির্বাচনি কেন্দ্র অমেঠী ও রায়বরেলীতেই তিনি প্রচারণা চালাতেন। এবার সেই গ-ি পেরিয়ে গোটা রাজ্যেই তাকে দিয়ে প্রচার করাতে চায় দল। ইতোমধ্যে তার প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা।
এই মুহূর্তে দলের সামনে বড় প্রশ্ন, উত্তর প্রদেশে কাকে মুখ করে এগোনো হবে। কংগ্রেসের প্রচার-কৌশলী প্রশান্ত কিশোর চেয়েছিলেন রাহুল বা প্রিয়াঙ্কাকে। কিন্তু গান্ধী পরিবার সে প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার রাহুলকে বা দলের ‘শেষ তাস’ প্রিয়াঙ্কাকে কোনো অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ করতে রাজি হয়নি গান্ধী পরিবার। বিশেষ করে দলের ভিতই তেমন শক্ত নয় উত্তর প্রদেশে। বিকল্প হিসেবে কোনো ব্রাহ্মণ নেতাকে বাছাই করার প্রস্তাব দেন প্রশান্ত। সেই সূত্রে সোনিয়া গান্ধী সপ্তাহ খানেক আগে শীলা দীক্ষিতকে দশ জনপথে ডেকে এই প্রস্তাব দেন। উমাশঙ্কর দীক্ষিতের পুত্রবধূ শীলা কনৌজ থেকে সাংসদ ছিলেন। সে জন্যও শীলার কথা ভেবেছিলেন সোনিয়া। কিন্তু দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, উত্তর প্রদেশ দখল করা সম্ভব নয়। কংগ্রেস লড়ছে তৃতীয় হওয়ার জন্য। হাতে সময়ও নেই বেশি। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রিত্বের পর কোন রাজ্যের রাজ্যপাল হওয়ার পর এখন উত্তর প্রদেশে হারের দায় মাথায় নিয়ে কী লাভ? ফলে কংগ্রেসকে অন্য বিকল্প খুঁজতে হচ্ছে।
উত্তর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ক্ষত্রীকে সরিয়ে নতুন মুখ আনার কথাও ভাবতে হচ্ছে সোনিয়াকে। জিতিন প্রসাদের মতো রাহুল ব্রিগেডের কোনো নতুন মুখকে আনার চাপ থাকলেও গুলাম নবিরা চাইছেন যেমন প্রমোদ তিওয়ারির মতো অভিজ্ঞ কাউকে। সংগঠনের উপরে যার নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
সোনিয়া-প্রিয়াঙ্কা আপাতত জমি তৈরি করে রাখলেও রাহুল ফিরলে তার সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে দলের এক নেতার কথায়, ‘বৈঠকে প্রিয়াঙ্কা থাকছেন মানেই রাহুলের কাঁধ কোনোভাবেই ছোট হয়ে যাচ্ছে না।’ তার ব্যাখ্যা, প্রিয়াঙ্কা এখনই নির্বাচনে লড়ছেন না। পরের লোকসভায় তিনি অমেঠী ও রায়বরেলী থেকে লড়তে পারেন। যদি অবশ্য সোনিয়া আর লড়তে রাজি না হন। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ