কোথায় গেল সব ঘূর্ণিঝড়!
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টর্নেডো, বন্যা, বজ্রপাত, দাবানল- বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই এই সব বিষয়ে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি দক্ষিণ এশিয়ায় বর্ষাঋতুর সময়কাল পরিবর্তন নিয়েও পরিবেশিত হচ্ছে নানা সংবাদ। কিন্তু বছরের এই সময়ে প্রত্যাশিত প্রাকৃতিক ঝড় টাইফুন ও হ্যারিকেনের সংবাদ কোথাও দেখা যাচ্ছে না। অথচ স্বাভাবিকভাবে বছরের এই সময়ে সংবাদ শিরোনাম হয় এ সমস্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
আটলান্টিক, প্যাসিফিক ও ক্যারিবিয়ান সাগরে সাইক্লোনের (হ্যারিকেন ও টাইফুন জাতীয় ঘূর্ণিঝড়ের সাধারণ নাম) অনুপস্থিতিই এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদদের নজর কাড়ছে। আল জাজিরা
প্যাসিফিকের উত্তরপশ্চিমে সারাবছর ঝড়ো আবহাওয়া থাকলেও মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পরিস্থিতি চরমে উঠে যায়। কিন্তু এ বছর ওই অঞ্চলে একটিও ঝড়ের দেখা পাওয়া যায়নি। ন্যাশনাল ওশনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মাইক ফিয়োরিনো জানান, ১৯৫০ সালের পর থেকে এই নিয়ে ষষ্ঠবারের মতো কোনো বিশেষ নামের ঝড় সৃষ্টি হতে জুন মাস পার হয়ে গেল। এই বিলম্বের ব্যখ্যাও দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এ বছরের শুরু থেকেই এল নিনো পরিবর্তিত হচ্ছে লা নিনায়, যেমনটা হয়েছিল ১৯৯৮, ১৯৮৩ ও ১৯৭৩ সালেও। এল নিনো এবং লা নিনা হচ্ছে দুটি পরস্পরবিরোধী অবস্থা যা ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মহাসাগরগুলোর উপরিতলের তাপমাত্রা পরিবর্তনের জন্য দায়ী। এল নিনোতে মহাসাগরের ওপরের বায়ুম-লের তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং লা নিনাতে তাপমাত্রা কমে যায়। এল নিনো থেকে লা নিনায় পরিবর্তনের মধ্যবর্তী এই অবস্থাকে আবহাওয়াবিদ্যার ভাষায় ‘নো ম্যান’স ল্যান্ড’ বলা যেতে পারে। এ সময় একটি নিরপেক্ষ বায়ুম-লীয় অবস্থা বিরাজ করে। বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তরপশ্চিমে সমুদ্রের উপরিতলের চাপ স্বাভবিকের চেয়ে বেশি। এছাড়াও শুকনো বায়ু সাইক্লোনের সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিচ্ছে।
ইতিহাসের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যায়, ১৯৭৩, ১৯৮৩ ও ১৯৯৮ সালে গড়ের চেয়ে কম জোরদার টাইফুন দেখা গেছে। এ থেকে বলা যেতে পারে এ বছরেও গড়ের চেয়ে অনেক কম টাইফুন দেখা যাবে।
ন্যাশনাল ওশনিক অ্যান্ড অ্যাটমসফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ও মেক্সিকোর ন্যাশনাল ওয়েদার অর্গানাইজেশনের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী টাইফুনের গড় সংখ্যা ১৩ হলেও এ বছর প্রশান্ত মহাসাগরে ছয়টি বড় টাইফুন হতে পারে এবং হ্যারিকেনের গড় সংখ্যা আট হলেও এ বছর দেখা যাবে মাত্র চারটি বড় হ্যারিকেন। এদিকে আটলান্টিকে দেখা যেতে পারে মাত্র তিনটি হ্যারিকেন বা টাইফুন। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ