মিতু হত্যা নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্ন আসছে
আজাদ হোসেন সুমন : এসপি বাবুলের স্ত্রী মিতু হত্যাকা-ে বাবুল আক্তারের জড়িত থাকা নিয়ে জন্ম হচ্ছে নতুন নতুন প্রশ্নের। মিলছেনা অনেক কিছুই। তাই প্রশ্নও বাড়ছে। জনমনের এসব প্রশ্নের অনেকগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।
বাবুল আক্তার কি ঈর্ষণীয় ইমেজ তৈরি করে জঙ্গিদের স্বার্থ সংরক্ষণ করছিলেন কি-না। বাবুল যদি হত্যার পরিকল্পনাকারী না হয়ে থাকে সেটাই বা পুলিশের পক্ষ থেকে কেন বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে না; একই সঙ্গে তিনি যদি জড়িত হয়ে থাকেন তাহলে তাকে গ্রেফতারইবা করা হচ্ছে না কেন। বাবুল আক্তারকে পুলিশ ১৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তার মানে তিনি একজন সন্দেহভাজন।
ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, তাকে আইনানুগভাবেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই বক্তব্য থেকে বলা যায়, তিনি আইনানুগভাবেই একজন সন্দেহভাজন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিল মিতু কী পরকীয়ায় জড়িত। প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, হতেও পারে। এ রকম একজন চৌকস অফিসার হঠাৎ করে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বিদেশে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন কেন। কেনইবা পুলিশের একটি অংশ চাইছে না বাবুল আর না ফিরুক এরকম নজির পুলিশের ইতিহাসে কি আর আছে? হত্যাকা-ে সরাসরি অংশ নেয়া ওয়াসিম, আনোয়ার ও মুসা ৩ জনই বাবুলের আস্থাভাজন সোর্স। নিজের সোর্সের হাতে একজন পদস্থ কর্মকর্তার স্ত্রী হত্যার ঘটনা নজিরবিহীন এর নেপথ্যের কারণ কি? বাবুল আক্তার কিছুদিন আগে সোর্স মুসাকে ১ লাখ টাকা সোর্স মানি দিয়েছেন। একজন পুলিশ সুপার কী একলাখ টাকা সোর্স মানি দিতে পারে। বা কী কারণে ১ লাখ টাকা সোর্স মানি দেয়ার প্রয়োজন পড়ল। বাবুল আক্তার কি চট্টগ্রামে ফ্ল্যাট কিনেছেন। তার স্ত্রীর নামে ব্যাংক একাউন্ট আছে কিনা থাকলে সেখানে কত টাকা আছে। মুসা কোথায়? মুসা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছিল আবার গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ মিতু হত্যায় জড়িত থাকার দায়ে যে ৫ জনকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তার মধ্যে মুসার নাম রয়েছে। মুসার কি হবে। আরও ২ জনকে যে এ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়েছে তাদের পরিণতিই বা কি হবে। মিতু হত্যার পর বাংলানিউজ২৪ ডটকমে মিতু হত্যা নিয়ে একটি স্টোরি প্রকাশিত হয়। সেখানে দাবি করা হয়েছিল, মিতু পরকীয়ায় জড়িত বলে বাবুল আক্তারের নির্দেশে মিতু খুন হয়েছে। পরে নিউজটি প্রত্যাহার করা হয়। সেটি কেন করা হলো। এই প্রত্যাহার কারো অনুরোধে না কারো নির্দেশে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন পদস্থ কর্মকর্তা কয়েকদিন আগেই বলেছেন, বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্মিত হয়েছি। এমনকি অপ্রত্যাশিত তথ্য গত শুক্রবার রাতে উনি পেয়েছেন যা উনাকে বিস্মিত করেছে। তদন্তকারীরা কি এতই আনাড়ি যে উপযুক্ত তথ্য ও সাক্ষ্যপ্রমাণ না পেয়েই আরেকজন পদস্থ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আটকে রাখলেন। এরকম হাজারো প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে যেসব প্রশ্নের জবাব নেই। সংগত কারণেই জনমনে ইত্যকার প্রশ্ন। যে প্রশ্নের জবাব নেই। পর্যবেক্ষক মহলের মতে পৃথিবীর আকাশে-বাতাসে উত্তরবিহীন শত কোটি প্রশ্ন ঘুরে বেড়ায় সব প্রশ্নের কি উত্তর মেলে। উত্তরবিহীন ভেসে বেড়ানো প্রশ্নের সাথে না হয় মিতু হত্যার সংশ্লিষ্ট আরও কিছু উত্তরবিহীন প্রশ্ন ঘুরপাক খাবে আর নিহত মিতুর অবুঝ সন্তানদ্বয়ের ‘বিনা অপরাধে আমাদের কেন শাস্তি পেতে হল’ জবাবহীন প্রশ্নও দীর্ঘশ্বাস হয়ে শূন্যে মিলিয়ে যাবে। সম্পাদনা: পরাগ মাঝি