আজাদ হোসেন সুমন ও মাহমুদুল আলম : মিতু হত্যামামলায় আপাতত কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারীদের শাস্তি নিশ্চিত হলেও নেপথ্যের কারণ বা নির্দেশদাতা কেÑ এ প্রশ্নের জবাব মিলছে না। তদন্তকারীরা এ ব্যাপারে সদুত্তর না দিলেও পুলিশের অসমর্থিত একটি সূত্র বলেছে, সময় নেওয়া হচ্ছে। খুব শিগগিরই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। সন্দেহের তীর বাবুলের দিকে থাকলেও পুলিশে তার কন্ট্রিবিউশন বিবেচনায় পুলিশ ধীরে চলো নীতি অবলম্বন করা হচ্ছে।
‘চাকরি না ছাড়লে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে জেলে যেতে হবে’ জিজ্ঞাসাবাদের সময় পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারকে এই কথা বলা হয়েছিল বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমান বলেন, এটা হাস্যকর কথা। আইনে কাউকে এরকম শর্তসাপেক্ষে মওকুফ করার সুযোগ নেই। এ কথা কে বলেছে পাল্টা প্রশ্ন করে তিনি বলেন, হত্যায় সম্পৃক্ততার প্রমাণ নিশ্চিত হলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশের একটি অসমর্থিত সূত্র বলেছে, বাবুল নিজেও পুলিশ বাহিনীতে নিয়মিত সদস্য হিসেবে থাকতে চাইছেন না। পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের আগে বাবুল বাবুল ধানমন্ডিস্থ আইডিয়াল কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। উচ্চতর ডিগ্রি নিতে বিদেশে যেতে আগ্রহী সে। শিগগিরই বাবুল এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করবেন বলে সূত্রটি দাবি করেছে। বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান বাসেত মজুমদার গতকাল বলেন, নিরপেক্ষ তদন্তে যদি হত্যাকা-ের সঙ্গে এই পুলিশ কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়, তাহলে তার চাকরিতো থাকবেই না, উপরন্তু তিনি আসামি হিসেবে বিবেচিত হবেন। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা যাই হোক না কেন, ফৌজদারি অপরাধের দায়ে তার বিচার হবে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ ম রেজাউল করিম বলেন, তিনি অপরাধ করেছেন কিনা জানি না। তবে আইনের কথা হচ্ছে, তিনি অপরাধ করে থাকলে পদত্যাগ করলেও অপরাধের দায় থেকে তার রক্ষা নেই। আর সুপ্রিম কোর্টে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলার আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, হত্যাকা-ের সঙ্গে তিনি জড়িত থাকলে, তার বিচার হতে হবে। চাকরি ছাড়া বা না ছাড়ার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
অন্যদিকে তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, জিজ্ঞাসাবাদে বাবুলের অনেক প্রশ্নের উত্তরই সন্তোষজনক ছিল না। বাবুল বারবারই দাবি করেছিলেন, আবু মুসা তার সোর্স হিসেবে কাজ করলেও শেষ দিকে এসে মুসার সঙ্গে তার সমস্যা হয়েছে। মুসা কারও দ্বারা প্ররোচিত হয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। পুলিশ বিভাগে ইতোমধ্যে বাবুল আক্তারকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানামুখী বিতর্ক। এ কারণে তিনি চাকরি অব্যাহত রাখতে চাইছেন না
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, একজন চৌকস কর্মকর্তা স্ত্রী হারিয়েছেন, সামাজিকবন্ধনের বাইরে একটা ব্যাপার আছে। এখন পর্যন্ত কোনো অনিয়ম হয়নি। মামলার তদন্তসহ সবকিছু আইন মেনেই এগোচ্ছে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম