বান্দরবানে আম চাষে ভাগ্য বদল অনেক চাষির
মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান : পাহাড়ে জুম চাষের পরিবর্তে বান্দরবানে বেড়েছে মিশ্র ফলের চাষ। পাহাড়ে আম্রপালি, ল্যাংরা, গোপালবুক এবং রাংগুয়াই চার জাতের আম চাষ করে ভাগ্য বদলেছে অনেক পাহাড়ি-বাঙ্গালি চাষির। এই চার ধরনের জাতের মধ্যে বান্দরবানে রাংগোয়াই আম পরিচিত আমের চাষ সবচেয়ে বেশি। খেতে বেশ সুস্বাদু এবং পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় এই আমের চাষ বান্দরবানে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
স্থানীয়ভাবে বান্দরবানে চার ধরনের রাংগুয়াই আমের জাত চাষ হচ্ছে। তারমধ্যে একটি আগাম জাত হিসেবে পরিচিত, আরেকটি শাঁস আঁশযুক্ত। অন্য দুটির একটির মাংস লালচে-হলুদ এবং আরেকটি নাবি জাত। খেতে বেশ সুস্বাদু হওয়ায় বাজারে আমগুলোর চাহিদাও রয়েছে প্রচুর এবং স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় এই আমের চাষ বান্দরবানে বাড়ছে দিনদিন। এছাড়াও বান্দরবানের হাট-বাজারগুলোতে এখন রাংগোয়াইসহ স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত আমে সয়লাব হয়েগেছে।
স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে প্রতি সপ্তাহে বান্দরবান থেকে আম চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
এদিকে চাষিদের মতে, চলতি মৌসুমে আমের ফলন ভালো হওয়াতে দামও ভালো পেয়েছি। আম খেতে খুবই সুস্বাদু, পোকার আক্রমণ কম এবং স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় এই আমের চাষ বান্দরবানে বাড়ছে দিনদিন। তাদের মতে, তাদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজাত জাতের ব্যবস্থা না থাকায় দ্রুত আম গুলো বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। বাজার জাত করার ব্যবস্থা থাকলে জেলার দুর্গম এলাকায় উৎপাদিত কৃষিপণ্য বেশি দিন সংরক্ষণ করা যেতো এবং কৃষিপণ্যের নায্যমূল্য পাওয়া যেতো। চাষীরা জানান, স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে প্রতি সপ্তাহে বান্দরবান থেকে আম চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জেলায় আম্রপালি ও রাংগুয়াই আমের আবাদ ক্রমেই বাড়ছে। অর্থকলী এ ফসলের আবাদেরদিকে চাষীরা ঝূঁকে পড়ছে বেশি। প্রতিবছরই আমের আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় চাষিরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
জেলার বাহির থেকে আসা বেপারীদের মতে, বান্দরবানে এ বছর প্রচুর আমের ফলন হয়েছে। যার কারনে আমের দাম অনেক কমেগেছে। কারন চাষীদের থেকে এক মাস আগেই আমের বাগান গুলো কিনে নেয়া হয়। হঠাৎ আমের দাম কমে যাওয়া ন্যায্য মূল্য পাচ্ছি না। তাদের মতে.কাঁচা মাল হওয়া বেশি দিন রাখা যাচ্ছেনা। ফলে কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে লোকসান গুনতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের মতে, বান্দরবানে আম চাষ করার কারণে অনেকটা পরির্বতন এসেছে। তবে ফরমালিন যুক্ত থেকে বান্দরবান মুক্ত রয়েছে। চাষিরা তাদের উৎপাদিত মালামাল বিক্রয় করে আর্থসামাজিক ভাবে লাভবান হচ্ছে।
তার মতে, জেলার মাটি ও অনুকুল আবহাওয়া ফলজপণ্য উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। চাষিরাও ঝুঁকছেন ফলদ উৎপাদনের দিকে। জেলায় চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৫শ ১৮ হেক্টর পাহাড়ি জমিতে আমের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৬ হাজার ৮০৬ মেট্টিকটন।