লেবার পার্টিতে ঐতিহাসিক সংকট করবিনের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করছেন অ্যাঙ্গেলা ঈগল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ঐতিহাসিক সঙ্কটের মুখে থাকা ব্রিটেনের লেবার পার্টির শীর্ষ নেতা জেরেমি করবিনের নেত্বত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাতে যাচ্ছেন দলের এমপি এবং ব্রিটেনের গণভোটের পর পদত্যাগ করা ছায়া বাণিজ্যমন্ত্রী অ্যাঙ্গেলা ঈগল। অপরদিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেয়া দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনও করবিনকেও সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিজস্ব সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারই তিনি করবিনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জের ঘোষণা দিয়েছেন। ব্রেক্সিট বলে পরিচিতি পাওয়া ব্রিটেনের গণভোটের ‘লিভ’ পক্ষের জয়ের পর গত রোববারই লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রীসভার যে কুড়ি জন সদস্য পদত্যাগ করেন, অ্যাঙ্গেলা ঈগল তাদের একজন। ওই গণ পদত্যাগের ঘটনাই জেরেমি করবিনের বিরুদ্ধে এমপিদের অনাস্থা ভোট দেয়ার প্রেক্ষাপট তৈরি করে দেয়। বিবিসি, গার্ডিয়ান
গণভোটের প্রচারে যুক্তরাজ্যের ইইউতে থাকার পক্ষে ছিলেন প্রধান দুই দলের নেতা ক্যামেরন ও করবিন। এতে ‘রিমেইন’পক্ষে শক্ত প্রচারণা না করতে পারার অভিযোগে দলের বেশিরভাগ এমপি করবিনকে অনাস্থা ভোট দেয়।
তারপরও করবিন পদত্যাগ করতে অস্বীকৃতি জানান।
মঙ্গলবার লেবার এমপিদের ভোটে করবিনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয় ১৭২-৪০ ভোটে। তবে ওই ভোটের ‘সাংবিধানিক বৈধতা’ নেই জানিয়ে পদত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়েছেন করবিন। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ৬০ শতাংশ পার্টি মেম্বারের ভোটে তিনি নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারবেন না তিনি।
বুধবার পার্লামেন্টে বক্তব্যে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দলের নেতা ক্যামেরন বলেন, করবিনের লেবার পার্টির নেতৃত্বে থাকাটা জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। ‘তার থাকাটা আমার দলের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট হতে পারে, জাতীয় স্বার্থে নয়। ঈশ্বরের দোহাই ভাই, সরে যাও।’ ক্যামেরনের এমন মন্তব্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন উভয় দলের এমপিরা।
এদিকে সমর্থকেরা যে করবিনকে ছেড়ে কথা বলছেন তা নয়। অনেক সমর্থকই তাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করছেন, যেমনটি ঘটেছে, লন্ডনের স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজের সামনে। সমর্থকেরা সেখানে করবিনকে পেয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেন, “ইউরোপের কি হবে? আমাদের যখন প্রয়োজন ছিল তখন আপনি কোথায় ছিলেন?” ইত্যাদি নানাবিধ প্রশ্ন।
এরকম প্রেক্ষাপটে অ্যাঙ্গেলা ঈগল, করবিনের নেতৃত্বের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে যাচ্ছেন । লেবার পার্টির দুই প্রতিদ্বন্দ্বী নেতার দর্শনে যে বিস্তর ফারাক তৈরি হয়েছে তার সমাধান এখন একমাত্র ভোটাভুটির মাধ্যমেই হতে পারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি নিশ্চিত করেছে, করবিনকে একটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ার জন্য যে ৫১জন এমপির সমর্থন প্রয়োজন সেটি রয়েছে ঈগলের। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জে করবিন সরাসরি অংশ নিতে পারবেন নাকি তারও ৫১জন এমপির সমর্থন লাগবে সেটি নিয়ে এখনো জল্পনা চলছে।