দীপক চৌধুরী : পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যার সঙ্গে জড়িতদের ‘সমন্বয়কারী’ ও খুনি হিসেবে আলোচিত কামরুল ইসলাম ওরফে মুসা সিকদার এখন কোথায় তা স্পষ্ট নয়।
পুলিশ দাবি করেছে, তিনি পলাতক। কিন্তু পরিবারের দাবি, পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে গেছে। আসলে এখন তিনি কোথায় এ প্রশ্ন তদন্তকারী দলের একাধিক সদস্যেরও। মিতু হত্যার গুরুত্বপূর্ণ ক্লু মুসা ওরফে মুসা সিকদারের জানা।
মিতু হত্যার নির্দেশদাতা কে তা স্পষ্ট করা যাচ্ছে না মুসাকে হাতের কাছে না পেলে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ হত্যার তদন্তে মুসা এখন সবচেয়ে বড় ‘উপাদান’।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, তাকে জীবিত পেতে হবে। কিন্তু তিনি জীবিত আছেনÑ এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজতে সম্ভাব্য ১৫টি স্থানে অভিযান চালানো হয়েছে। চট্টগ্রাম শহরের বাইরে সীতাকুণ্ড, কক্সবাজার, সিলেট, আখাউড়া, কুমিল্লা, ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে তার অস্তিত্বের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে তার খোঁজে চষে বেড়ানোর পর একটি সূত্র বলেছে, মুসাকে দেশের বাইরে পাঠানো হয়েছে। তিনি ভারতে পালিয়ে আছেন।
অপর আরেকটি সূত্র বলেছে, মুসা একটি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে। মুসার পরিবারও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কব্জায় রয়েছে। তাকে গুম করে ফেলা হয়েছে কিনা এখন এই সন্দেহও ঘুরপাক খাচ্ছে তার পরিবারের কাছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, মুসাকে আর হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। যদি তাকে পাওয়া না যায়, তাহলে খুনের নির্দেশদাতা সম্পর্কে তথ্য জানার পথও বন্ধ হয়ে যাবে। দীর্ঘদিন ধরে মুসার বাড়িঘরে ঝুলছে তালা। পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, মিতু হত্যার পর ১২ জুন পুলিশ তাকে তুলে নিয়ে যায়। মামলার তদন্তের সঙ্গে সংশিষ্টরা বলছেন, মুসা নামের কাউকে তারা এখনও গ্রেফতার করেননি।
মিতু হত্যাকাণ্ডের পর দুই আসামি ওয়াসিম ও আনোয়ার এ হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে জবানবন্দিতে মুসার নাম উল্লেখ করেছেন। সিএমপির বাকলিয়া থানার ওসিসহ চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তাকে সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতেন। বাবুল আক্তারেরও ঘনিষ্ঠ সোর্স ছিলেন মুসা। দেশে ঝড় তোলা এ হত্যাকাণ্ডে মুসার নাম ঘুরেফিরে এলেও তার খোঁজ মিলছে না। মুসাকে না পাওয়ায় মিতু হত্যার তদন্ত ঘুরপাক খাচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে এখন সামনে। প্রশ্ন উঠেছে, পুলিশ যদি তাকে আটক করেই থাকেÑ তাহলে কী কোন ‘সত্য’ লুকানোর জন্য মুসাকে সামনে আনা হচ্ছে না। অন্যদিকে, এটাও শোনা যায়Ñ বাবুল আক্তারের মুখোমুখি করার জন্য মুসাকে ঢাকায় নেওয়া হয়েছিল। তবে এ বিষয়ে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কেউই মুখ খুলতে চান না।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একজন ডিআইজি পদমর্যাদার কর্মকর্তা বলেন, সত্য কিছুদিনের মধ্যেই জানতে পারবে দেশবাসী। একটু অপেক্ষা কেবল।