
২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট পাস
হাসান আরিফ : ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জন্য ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে। আজ ১ জুলাই থেকে নতুন অর্থবছরের এই বাজেট কার্যকর হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বাজেট ও বিল উপস্থাপন করলে কণ্ঠভোটে তা পাস করা হয়। এ সময় সরকার দলীয় সদস্যরা টেবিল চাপড়ে অর্থমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
দশম জাতীয় সংসদের একাদশ অধিবেশনে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, সরকার ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৪৫তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ১৭তম ও বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের দেওয়া ১০ম বাজেট।
এর আগে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধরীর সভাপতিত্বে বেলা দেড়টায় অধিবেশন শুরু হয়।
নতুন অর্থবছরের বাজেট থেকে উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় হবে এক লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এক লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এডিপি বহির্ভূত প্রকল্প ব্যয় ৪ হাজার ১৪৭ কোটি টাকা। এছাড়া কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচিতে এক হাজার ৮২৬ কোটি এবং রাজস্ব বাজেট থেকে অর্থায়নকৃত উন্নয়ন কর্মসূচিতে ব্যয় হবে ৩৫৪ কোটি টাকা। তবে মূল উন্নয়ন ব্যয় এক লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকার সঙ্গে নতুন অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা ও করপোরেশনগুলোর উন্নয়ন ব্যয় ৯ হাজার ৬৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা যোগ করলে নতুন এই অর্থ অর্থবছরে সর্বমোট উন্নয়ন ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক লাখ ২৩ হাজার ৩৪৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এই বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) ধরা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। তবে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে এডিপিতে পাঁচ হাজার ৬৮৫ কোটি ৪৮ টাকার কর্মসূচি রয়েছে।
অধিবেশনের শুরুতেই স্পিকার জানান, ৫৬টি মঞ্জুরি দাবির মধ্যে ৭টি দাবির উপর আলোচনার সুযোগ রয়েছে। এরপর এসব দাবির উপর আলোচনায় অংশ নেন সরকার ও বিরোধী দলীয় সদস্যরা। দাবিগুলো হলো ৮, ১০, ২১, ২৩, ৩১, ৩৩ ও ৪৪ নম্বর।
নির্দিষ্টকরণ বিল পাস : নতুন ২০১৬-১৭ অর্থবছরের বাজেট ব্যয়ের বাইরে সরকারের বিভিন্ন ধরনের সংযুক্ত দায় মিলিয়ে মোট ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৫৩ কোটি ৯৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকার নির্দিষ্টকরণ বিল জাতীয় সংসদে কণ্ঠভোটে পাস করা হয়েছে। এর মধ্যে সংসদ সদস্যদের ভোটে গৃহীত অর্থের পরিমাণ ৩ লাখ ১১ হাজার ৪১০ কোটি ১৪ লাখ ৫১ হাজার টাকা এবং সংযুক্ত তহবিলের ওপর দায় ১ লাখ ৫৩ হাজার ১৪৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা।
সংযুক্ত তহবিলের দায়ের মধ্যে ট্রেজারি বিলের দায় পরিশোধ, হাইকোর্টের বিচারপতি এবং মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের বেতন ইত্যাদি দায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
উল্লেখ্য, মোট বাজেট ব্যয়ের মধ্যে বৈদেশিক অনুদান রয়েছে। সেই অনুদান বাদ দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নির্দিষ্টকরণ অর্থ মঞ্জুরের জন্য সংসদে পাস করা হয়েছে।
মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাব : নতুন বাজেটের ওপর সংসদে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ খাতের ৫৬টি মঞ্জুরি দাবির বিপরীতে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র সাংসদ সদস্যরা ৪২০টি বিভিন্ন ধরনের ছাঁটাই প্রস্তাব এনেছিলেন। বিরোধী দল ও স্বতন্ত্র সাংসদদের আলোচনা সত্ত্বেও ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়ে যায়। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম
