
তুরস্কে হামলায় ছিল ৩ দেশের নাগরিক
ইমরুল শাহেদ : তুরস্কের কর্মকর্তাদের বরাতে বিবিসির একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, দেশটির রাজধানী ইস্তাম্বুলের কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরের তিন হামলাকারী ছিলেন রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও কিরগিজিস্তানের নাগরিক। তুরস্ক বিশ্বাস করে, আত্মঘাতী হামলার নেপথ্যে রয়েছে আইএস। সর্বশেষ মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইস্তাম্বুল থেকে ১৩ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে এবং আরও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয় ইজমির থেকে। সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত পুলিশ ২২ জনকে আটক করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা হামলাকারীদের পরিচয় সম্পর্কে প্রথমে বলেছেন রয়টার্সকে। পরে সেখান থেকে দোগান নিউজ এজেন্সি হয়ে বিশ্বের অন্যান্য সংবাদমাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। একটি নিউজ এজেন্সি এক হামলাকারীর নাম উল্লেখ করেছে ওসমান ভাদিনভ। তিনি ২০১৫ সালে রাকা থেকে তুরস্কে প্রবেশ করেছিলেন। ওসমান যে রাশিয়ার ককাসের অধিবাসী তাতে কোনো সন্দেহ নেই বলে জানায় সংবাদমাধ্যমটি। তুরস্কের গণমাধ্যমে মুদ্রিত একটি ছবিতে দেখা যায়, হামলাকারী তিনজন হামলার আগে এক স্থানে সমবেত হয়। তাদের গায়ে ছিল ডার্ক জ্যাকেট। দুজনের মাথায় টুপি এবং একজন হাসছিলেন। এবিসি নিউজ জানিয়েছে, তাদেরকে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, হামলাকারীরা রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক। তবে, কেউ এ হামলার দায়িত্ব এখনো স্বীকার না করলেও এর পেছনে কোনো ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন রয়েছে বলে দাবি করেছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। গোয়েন্দা সতর্কতায়ও এমন আভাস মিলেছিলো। আইএস জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে এমন সতর্কবার্তা আরও ২০ দিন আগেই সর্বোচ্চ পর্যায়কে জানিয়েছিলেন গোয়েন্দারা। হামলার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের ভিডিও বিশ্লেষণ শুরু করেছে তুরস্কের পুলিশ। সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা গেছে একটি বোমা বিস্ফোরণের প্রায় ২০ সেকেন্ড আগে পুলিশ আত্মঘাতী হামলাকারীকে গুলি করেছিল।
হামলায় নিহত ব্যক্তিদের অধিকাংশই তুরস্কের নাগরিক। হামলার পর বিমানবন্দরে সব ফ্লাইট সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিছু ফ্লাইট সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমান চলাচল আবার শুরু হয়েছে। হামলার পরদিনই অর্থাৎ বুধবার তুরস্কে একদিনের জাতীয় শোক পালিত হয়েছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লড়াইয়ে এই হামলা একটি মোড় ঘোরানো ঘটনা হিসেবে কাজ করা উচিত। তিনি বলেন, আজ ইস্তাম্বুলে যে বোমা বিস্ফোরিত হলো, তা দুনিয়ার যেকোনো শহরে হতে পারত।’ এ হামলার নিন্দা জানিয়ে তুরস্কের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জার্মানি থেকে একই ধরনের ঘোষণা এসেছে। সন্ত্রাস-উগ্রবাদের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক তৎপরতা জোরদার করার কথা বলেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
তুরস্কের ইস্তাম্বুল বিমানবন্দরে জঙ্গিদের বড় কোনো হামলা হতে পারে বলে ঘটনার ২০ দিন আগেই বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে হুঁশিয়ার করেছিল দেশটির গোয়েন্দা বাহিনী। হামলার সময়ের সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল ফোনের ভিডিও বিশ্লেষণ করে এগোচ্ছে তদন্ত কাজ। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি
